প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন ওয়াশিংটন সফরের আগে যাতে বেসুর না বাজে সে জন্য তৎপর হল হোয়াইট হাউস। আজ সেখানে এক সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় গণতন্ত্রের স্বাস্থ্য নিয়ে একটি প্রশ্নের উত্তরে চটজলদি শংসাপত্র দিয়েছেন বাইডেন সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কর্তা জন কারবি। তাঁর কথায়, “ভারত প্রাণবন্ত গণতান্ত্রিক দেশ। যে কেউ নয়াদিল্লি গেলেই নিজের চোখে সেটা দেখতে পাবেন। অবশ্যই আমি আশা করব গণতন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং শক্তি আগামী ভারত-আমেরিকা আলোচনার অন্তর্ভুক্ত হবে।” এর সঙ্গেই অবশ্য তাঁকে বলতে শোনা যায়, “দেখুন আমরা কখনও সরে যাই না (গণতন্ত্রের হাল নিয়ে পর্যালোচনায়)। এটা তো আপনি বন্ধুর সঙ্গে করতেই পারেন।’’
কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, রাহুল গান্ধী যখন খাস আমেরিকায় বসে মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারতের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন, তখন আমেরিকার কর্তার এই মন্তব্য কেন্দ্রের পালে কিছুটা বাতাস দেবে। পাশাপাশি এটাও ঠিক, কৌশলগত অংশীদার এবং কোয়াড গোষ্ঠীর মিত্র ভারতকে এখন ভূকৌশলগত এবং বাণিজ্যিক কারণে বিভিন্ন ভাবে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে বাইডেন প্রশাসনের। মোদীর আসন্ন সফরে সেই লক্ষ্যে পদক্ষেপ করা হবে। ফলে, তার আগে মোদী-বাইডেন বৈঠকের সুর বাঁধার কাজটিও সারা হয়েছে আজ।
গত কয়েক বছরে লাগাতার গণতন্ত্রের প্রশ্নে পশ্চিমের সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদী সরকার। এ কথা ঠিকই যে সরাসরি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এই নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে শোনা যায়নি। কিন্তু কখনও সে দেশের কংগ্রেসের বার্ষিক রিপোর্টে, কখনও সেখানকার অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা বা ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্রের অভিযোগ এনে কার্যত তুলোধোনা করা হয়েছে মোদী সরকারকে।
তবে সমান্তরাল ভাবে বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং এখন জো বাইডেন – মোদীর জমানার এই তিন আমেরিকার প্রেসিডেন্টই নয়াদিল্লির সঙ্গে নিজ নিজ সময়ে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছেন তাঁদের জাতীয় স্বার্থের কারণে। ভারতের অতিকায় বাজার যদি আমেরিকার একটি আকর্ষণবিন্দু হয় তাহলে অন্যটি হল চিনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে ভূকৌশলগত উপযোগিতা।
আজ তাই আমেরিকার কর্তার কথায়, “বহুবিধ কারণে ভারতের অত্যন্ত গুরুত্ব রয়েছে। সেটা শুধুমাত্র আমেরিকার কাছে নয়, বহুপক্ষীয় স্তরেও। প্রেসিডেন্ট বাইডেন উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন সমস্ত বিষয় নিয়ে মোদীর সঙ্গে কথা বলে বন্ধুত্ব ও অংশীদারিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।”
সফরের সময়ে আমেরিকান কংগ্রেসের বক্তৃতার আমন্ত্রণের জন্য মোদী আজ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি-সহ আমেরিকান কংগ্রেসের নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।