১৮৪০ সাল থেকে এই শহরে বসতি স্থাপন হতে শুরু হয়েছিল। তবে সে সময় শহর তকমা পাওয়ার মতো জনবসতি গড়ে ওঠেনি। ইতিউতি কয়েকটি বাড়ি ছিল মাত্র।
ক্রমে পাকা রাস্তা, রেললাইন, দোকানপাট মিলিয়ে উন্নয়ন ঘটে এলাকার। আরও বেশি মানুষ থাকতে শুরু করেন। ধূ ধূ এলাকা ভরে ওঠে মানুষে। দিনভর ব্যস্ত থাকত সেই শহর।
অথচ আজ সেখানে নামমাত্র কয়েকটি বাড়ি চোখে পড়বে। সেই পাকা রাস্তা, সেই রেললাইনও যেন কেউ মুছে ফেলেছে। পড়ে থাকা বাড়িগুলোও ভগ্নপ্রায়। কোনওটার আবার অর্ধেকের বেশি অংশ জলে নিমজ্জিত।
আমেরিকার উটার থিসেল। থিসেলের পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে আমেরিকার ৬/৮৯ নম্বর রাস্তা। এই রাস্তা বরাবর যাওয়ার সময়ই একপাশে পড়বে থিসেল শহর। যা আজ ভূতুড়ে শহর হিসাবেই বেশি পরিচিত।
ব্যস্ত ওই শহর আজ সম্পূর্ণ নিশ্চুপ। ক্ষণিকের জন্য গাড়ি থামালে এর নিস্তব্ধতা শরীরে শিহরণ জাগিয়ে তোলে।
১৮৪০ সাল থেকে বসতি স্থাপন শুরু হলেও ১৮৯০ সাল নাগাদ এই শহর পুরোপুরি বিস্তার লাভ করে। গুরুত্বপূর্ণ রেললাইন, সড়কপথ তৈরি হয়ে গিয়েছে তত দিনে।
১৯২০ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী থিসেলের জনসংখ্যা বেড়ে হয় ৪১৭। ডাকঘর, স্কুল, চিকিৎসা কেন্দ্র, দোকান, সেলুন প্রভৃতি গড়ে ওঠে শহরকে কেন্দ্র করে। কিন্তু ১৯৮৩ সাল নাগাদ এই শহর পুরোপুরি ফাঁকা হয়ে যায়।
ওই বছর ভয়াবহ বৃষ্টি শুরু হয় থিসেলে। থিসেল পাহাড়ি এলাকা। বৃষ্টিতে ধস নামতে শুরু করে। ক্রমে যেন গোটা পাহাড়টাই ভেঙে পড়ে থিসেল শহরের মাথায়।
নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় রেললাইন, পাকা রাস্তা। ধসে তলিয়ে যায় ঘর-বাড়ি। তার উপর বৃষ্টির প্রকোপও এত ভয়ঙ্কর ছিল যে রাতারাতি জল জমে যায় শহরে।
রাতারাতি জলের নীচে ডুবে যায় গোটা শহর। বাঁচার আশায় ঘর-বাড়ি ছেড়ে, শহর ছেড়ে আশেপাশের সুরক্ষিত অঞ্চলে চলে যান বাসিন্দারা।
এখন এই শহর পুরোপুরি পরিত্যক্ত। রাস্তার ধারে আজও কয়েকটি পরিত্যক্ত বাড়ির দেখা মেলে। ঘাসে ঢাকা বাড়িগুলির অর্ধের জলের তলায় নিমজ্জিত অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে।
শহরটি এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে যে এর পুনর্নিমাণ করা খুবই ব্যয়বহুল। ফলে সে কাজ শুরুও হয়নি আজও। ভূতুড়ে হয়েই পড়ে রয়েছে।