আমেরিকার ফ্লোরিডার ছোট্ট শহর উইকি ওয়াচি।
২০১০-এর জনগণনা অনুসারে, সেখানকার জনসংখ্যা মাত্র ১৩ জন! জনসংখ্যা এত কম হলেও পর্যটকের আনাগোনা লেগেই থাকত এই শহরে।
পর্যটকদের আগমনের কারণ বিনোদন। সেখানকার ওয়াটার পার্ক, উইকি ওয়াচি স্প্রিং, বিভিন্ন প্রাণী সম্পর্কিত প্রদর্শনী দর্শকের কাছে ছিল অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্র।
তবে দর্শককে সব থেকে বেশি আকৃষ্ট করত উইকি ওয়াচি স্প্রিংয়ে হওয়া মৎস্যকন্যাদের অনুষ্ঠান। মৎস্যকন্যাদের দেখতে প্রতি দিন পর্যটকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
ওয়াটার পার্কে ছিল বিশালাকার অ্যাকোয়ারিয়াম। সেখানেই হত মৎস্যকন্যাদের অনুষ্ঠান। রোজ টিকিট কেটে সেই অনুষ্ঠান দেখতেন পর্যটকরা।
ওই ওয়াটার পার্কে প্রথম অনুষ্ঠান হয় ১৯৪৭-এর ১৩ অক্টোবর। তার পর থেকেই সেখানে চলে আসছে ওই অনুষ্ঠান।
বাচ্চা থেকে বুড়ো, মৎস্যকন্যাদের শো দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়ত সবাই।
মৎস্যকন্যা সাজতে মডেলরা আসতেন বিভিন্ন জায়গা থেকে। মৎস্যকন্যার পোশাক পরে জলে নেচে বেড়াতেন তাঁরা।
জলের মধ্যে মৎস্যকন্যাদের নাচে আকৃষ্ট হতেন দর্শকরা।
মৎস্যকন্যা এক কল্পিত প্রাণী। যার দেহের উপরিভাগ নারীর মতো ও দেহের নীচের অংশ মাছের মতো।
বিশ্বের বিভিন্ন রূপকথার গল্পে বার বার উঠে এসেছে এই মৎস্যকন্যারা। কিন্তু বাস্তবে এর কোনও অস্তিস্ত্ব। তবুও উইকি ওয়াচিতে মৎস্যকন্যাদের নিয়ে বিস্ময়ের শেষ ছিল না।
যদিও মৎস্যকন্যাদের জন্য যে শহরের নাম ছড়িয়ে পড়েছিল আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে, সেই শহরের আজ আর কোনও অস্তিত্ব নেই।
এ বছরের শুরুতে একটি বিল পাশ করেছেন সেখানকার গভর্নর, যার মাধ্যমে অবলুপ্ত হয়েছে ইউকি ওয়াচি মিউনিসিপ্যালিটি। বর্তমানে সেটিকে হর্নেন্ডো কাউন্টির অন্তর্গত করা হয়েছে।
এই অবলুপ্তির অন্যতম কারণ, জনসংখ্যা। ২০০০ এ এই শহরের জনসংখ্যা ছিল ১৩। ২০১০-এও তাই।
তার পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের দুর্নীতি এই শহরের অবলুপ্ত করার অন্যতম কারণ।
কিন্তু শহর অবলুপ্ত হলেও উইকি ওয়াচি পার্ক এখনও রয়েছে সেখানে। হয় মৎস্যকন্যাদের অনুষ্ঠানও। কিন্তু দর্শকদের আকর্ষণ এখন অপেক্ষাকৃত কম।