Volodymyr Zelenskyy on US

আমেরিকার সঙ্গে খনিজ চুক্তিতে রাজি, ডাকলে যাব আবার, ব্রিটেন থেকে শর্ত শুনিয়ে রাখলেন জ়েলেনস্কি

খনিজ চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্দেশ্যেই হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন জ়েলেনস্কি। সেখানে ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে বৈঠক হয় তাঁর। কিন্তু চুক্তিটি বাতিল হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৫ ০৮:১২
Share:
photo of Volodymyr Zelenskyy

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। —ফাইল চিত্র।

আমেরিকার সঙ্গে খনিজ চুক্তি স্বাক্ষরে এখনও রাজি আছে ইউক্রেন। ব্রিটেন থেকে রবিবার এমনটাই জানালেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকা যদি আবার তাঁকে ডাকে, ফের তিনি সেখানে যেতে প্রস্তুত। আবারও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে প্রস্তুত। কিন্তু সেই সঙ্গে নিজের শর্তও শুনিয়ে রেখেছেন জ়েলেনস্কি। জানিয়েছেন, তাঁর কথাও শুনতে হবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের অবস্থাও বিবেচনা করতে হবে।

Advertisement

খনিজ চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্দেশ্যেই হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন জ়েলেনস্কি। সেখানে ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে বৈঠক হয় তাঁর। সংবাদমাধ্যমের সামনেই তাঁদের তিন জনের মধ্যে কিছু ক্ষণ উত্তপ্ত বাক্যালাপ চলে, যা সাম্প্রতিক অতীতে বেনজির। চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। মধ্যাহ্নভোজ না করেই হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যান জ়েলেনস্কি। এই ঘটনার পর ইউক্রেন প্রধান সোজা ব্রিটেনে গিয়েছেন এবং সেখানকার প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। লন্ডনে একটি সম্মেলনেও যোগ দেন তিনি। সেখান থেকেই রবিবার (স্থানীয় সময়) বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকারে জ়েলেনস্কি জানান, আমেরিকার সঙ্গে খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করতে এখনও প্রস্তুত তিনি। তবে তার আগে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তিনি একটি ‘গঠনমূলক আলোচনা’ চান। জ়েলেনস্কি বলেন, ‘‘আমি শুধু চাই, ইউক্রেনের অবস্থার কথাটাও শোনা হোক। বিবেচনা করা হোক। আমাদের বন্ধু দেশগুলি মনে রাখুক, এই যুদ্ধে মূল আগ্রাসী কারা, যুদ্ধ শুরু করেছিল কারা।’’

সোমবার সকালে সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন জ়েলেনস্কি। তাতে বলেছেন, ‘‘আমরা ইউরোপ থেকে পূর্ণ সমর্থন পেয়েছি। একটি বিষয়ে সকলেই একমত, সকলেই শান্তি চায়। সেই কারণেই আমাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দরকার। এটাই ইউরোপের অবস্থান। অবশ্যই আমরা আমেরিকাকেও গুরুত্ব দিই। ওদের কাছ থেকে আমরা অনেক সাহায্য পেয়েছি। তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। ইউক্রেনের প্রতিরোধ পুরোটাই তার বন্ধু দেশগুলির সাহায্যের উপর নির্ভরশীল। যে সাহায্য তারা করছে ইউক্রেন এবং নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে। আমরা শান্তি চাই। বিরামহীন যুদ্ধ চাই না। নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এই শান্তির চাবিকাঠি।’’

Advertisement

আমেরিকায় ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বিষয়ে অন্য অবস্থানের পথে হেঁটেছিলেন। তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার বার্তা দেন। ট্রাম্পের এই অবস্থান প্রকাশ্যে আসার পর ইউক্রেনের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কের অবনতি হয়। খনিজ চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা হয়েছিল। হোয়াইট হাউসে গেলে সেখানেও জ়েলেনস্কিকে সমঝোতার পরামর্শ দেন ট্রাম্প, ভান্স। কিন্তু জ়েলেনস্কি তা মানতে পারেননি। সেখান থেকেই বিতণ্ডার সূত্রপাত।

লন্ডনে ইউরোপীয় রাষ্ট্রনেতাদের সম্মেলনে রবিবার জ়েলেনস্কি উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, ওয়াশিংটনের বৈঠকে যা ঘটেছে, তা থেকে আমেরিকা বা ইউক্রেনের কোনও লাভ হবে না। লাভ হবে রাশিয়ার। জ়েলেনস্কি বলেন, ‘‘আমাকে যদি ডাকা হয়, আমি আবার আমেরিকায় যাব। খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করতে এখনও আমি প্রস্তুত। কিন্তু আমাদের কথাও শুনতে হবে।’’ ইউক্রেনের জমির মালিকানা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে কোনও সমঝোতার পথে হাঁটবেন না, সাফ জানিয়ে দিয়েছেন জ়েলেনস্কি।

ট্রাম্পের সঙ্গে সংঘাতের পর ব্রিটেন-সহ ইউরোপের বেশির ভাগ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে পাশে পেয়েছেন জ়েলেনস্কি। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাতে ব্রিটেন ২৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে। ওই টাকা অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হবে, জানিয়েছেন জ়েলেনস্কি। তিনি আমেরিকার কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন। লন্ডন থেকে বলেন, ‘‘ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে পারলে সেটাই হবে নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় নিশ্চয়তা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement