গ্যাভিন সামার। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
যার যা নেই সেই বোঝে তার মর্ম, যেমন এই ১১ বছরের ছেলেটি। ক’দিন আগে পর্যন্ত সে এক হাতে একটা জলের বোতলও তুলতে পারত না। এখন সে তা পারে। বড়দিনের আগেও তার দু’টি হাতই ছিল অসম্পূর্ণ। কিন্তু এক ব্যক্তি তাঁর কাছে স্যান্টাক্লজ হয়ে দেখা দিলেন। দিয়ে গেলেন দু’টি হাত।
আমেরিকায় টেনিসির বাসিন্দা গ্যাভিন সামার। জন্ম থেকে যার হাতের কোনও আঙুল ছিল না। বাঁ পায়েও কোনও আঙুল নেই। এমনকি তার জিভটিও অসম্পূর্ণ। ফলে অনেক কষ্ট করে, অন্যের সাহায্য নিয়ে তাকে দৈনন্দিন অনেক কাজ করতে হত। প্রতিদিন সে স্বপ্ন দেখতো, তারও যদি আর পাঁচ জনের মতো স্বাভাবিক হাত থাকতো, তবে সেও অন্যদের সঙ্গে বেসবল, বাস্কেটবল খেলতে পারত। কিন্তু স্বপ্ন তো স্বপ্নই।
সেই স্বপ্ন যে সফল হবে কোনও দিন মনে হয় সে ভাবেওনি। বড়দিনে কী উপহার চাই জিজ্ঞেস করায় তাঁর মা কোরি সামার-কে গ্যাভিন বলে, তার জন্য ‘দু’টি হাত এনে দাও’। ছেলের সামনে প্রকাশ না করলেও চোখে জল এসে যায় তার মায়ের। কিন্তু তিনিই বা কী করবেন। তবে তিনি এই ঘটনা তুলে ধরেন ফেসবুকে।
কোরি সামার হয়তো আশাও করেননি, এমন একজনের চোখে পড়বে সেই পোস্ট যা তাঁর ছেলের জীবন আনন্দে ভরিয়ে দেবে। ফেসবুক পোস্টটি চোখে পড়ে অ্যান্টনি ইকোনমাস নামে এক ব্যক্তির। তিনি একটি কোম্পানি চালান, যারা মার্কেটিং ও প্রোডাক্ট ডেভলপমেন্টের কাজ করে। অ্যান্টনি পোস্টটি দেখে ভাবতে থাকেন তাঁরা কিছু করতে পারবেন কিনা।
অ্যান্টনিরা চেষ্টা করতে শুরু করেন গ্যাভিনের জন্য দুটি হাত তৈরি করার। যা দিয়ে সে স্বাভাবিক কাজগুলি অন্তত করতে পারে। তাঁদের সেই চেষ্টা সফলও হয় একদিন। তাঁরা এক জোড়া হাত বানিয়ে ফেলেন গ্যাভিনের জন্য।
অ্যান্টনি যোগাযোগ করেন গ্যাভিনের মায়ের সঙ্গে। সবাই মিলে গ্যাভিনের জন্য একটি সারপ্রাইজের বন্দোবস্ত করেন। তবে সেটাও বাড়িতে করা হয় না। শহরের মেয়রের অফিসে গ্যাভিনের কাকিমা একটি পুরস্কার পাচ্ছেন বলে তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়।
মেয়রের অফিসে গ্যাভিনকে একটি বাক্স উপহার দেওয়া হয়। প্রথমে সে ভেবেছিল সামান্য কিছু উপহার অপেক্ষা করছে তার জন্য। সেই মতো সে খুলতে আরম্ভ করে সেটি। এবার খুলতে খুলতে বাক্সের ভিতরে পৌঁছে দেখে তার জন্য সারা জীবনের স্বপ্ন বাস্তব হয়ে উপস্থিত। তার জন্য দু’টি কৃত্রিম হাত রয়েছে বাক্সের মধ্যে। আনন্দে সে হতবাক হয়ে যায়। তারপর তাকে গোটা ঘটনাটি বলা হয়। গ্যাভিন আবেগে জড়িয়ে ধরে তার হাত তৈরি করে দেওয়া সেই ‘স্যান্টাক্লজ’ অ্যান্টনিকে।
আরও পড়ুন: নিয়মিত এই সব কাজ করেন না স্বামী, বিচ্ছেদের আর্জি স্ত্রীর
গ্যাভিনের মা কোরি গোটা ঘটনা ২৪ ডিসেম্বর ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি কিছু ছবি ও ভিডিয়ো দিয়েছেন। ধন্যবাদ জানিয়েছেন, মেয়র এবং অ্যান্টনিকে।
দেখুন সেই ফেসবুক পোস্ট: