কারখানা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সেই দৃশ্য। টুইটার থেকে প্রাপ্ত ছবি।
চিনের হুনান প্রদেশে ফের চোখ রাঙাচ্ছে কোভিড। সেখানে গত সাত দিনে ১৬৭ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই কোভিড-বিধি মানার বিষয়ে কড়া নির্দেশ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু নিয়মের কড়াকড়িতে বিরক্ত একাধিক মানুষ শহর ছাড়ছেন। হুনান প্রদেশের রাজধানী ঝিনাঙঝাউতে অ্যাপল সংস্থার কারখানা থেকে কাঁটাতারের বেড়া টপকে পালাচ্ছেন শ্রমিকরাও। একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক স্টিফেন ম্যাকডোনেল এই দৃশ্য তাঁর ফোনের ক্যামেরায় তুলে রাখেন। যা পরে চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
চিনের অ্যাপল কারখানাটির মালিক ফক্সকন বলে একটি সংস্থা। সংস্থাটি তাদের কারখানায় তিন লক্ষ কর্মীকে নিযুক্ত করেছিল। সংস্থাটি বিশ্বের সর্বাধিক আইফোন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কারখানাটি খোলে। কিন্তু জানা যাচ্ছে, সেই সংস্থার অধিকাংশ কর্মীই পালিয়ে যাচ্ছেন কারখানা থেকে।
কিন্তু কেন এমন করছেন শ্রমিকরা? চিন প্রশাসনের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওই ব্রিটিশ সাংবাদিকের দাবি, কোভিড আটকাতে সে দেশের সরকার একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছে। দেশের সব নাগরিককে অ্যাপটি তাঁদের মোবাইলে রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অ্যাপটির মাধ্যমে এক জন ব্যক্তির গতিবিধি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পৌঁছে যাবে নির্দিষ্ট তথ্যভান্ডারে। পালিয়ে যাওয়া শ্রমিকদের একাংশের দাবি, ঘরের বাইরে তাঁদের চলাচল করাই বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কোভিড-বিধি মানতে গিয়ে তাঁরা কার্যত গৃহবন্দি হয়ে গিয়েছিলেন বলে দাবি তাঁদের।
অ্যাপল কারখানার শ্রমিকদের অধিকাংশই নিজেদের গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন। চিনের গ্রাম এবং ছোট শহরগুলিতে কোভিডের প্রভাব কম হওয়ায় কোভিড-বিধির কড়াকড়িও কম। তাই সেখানেই ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা। অধিকাংশই ৬০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবেন। তাঁদের সাহায্য করার জন্য ইতিমধ্যেই বড় এবং ছোট রাস্তাগুলির ধারে পানীয় জল এবং শুকনো খাবার নিয়ে বসে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রসঙ্গত, চিনের কঠোর কোভিড-নীতি নিয়ে আগেও নানা প্রশ্ন উঠেছে। কোভিড-নীতিকে মান্যতা দিতে গিয়ে চিনের বড় শহরগুলিতে খাদ্যসঙ্কট দেখা দিয়েছে। দেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।