হামলাকারী উসমান খান। ছবি: এপি।
লন্ডন ব্রিজে হামলাকারী উসমান খানের পরিকল্পনা ছিল কাশ্মীরে হামলা চালানোর। একটি সন্ত্রাসবাদী মামলায় ২০১২ সালে লন্ডনের একটি আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। সেই মামলার রায় দেওয়ার সময় বিচারপতি কাশ্মীরে হামলার ছকের বিষয়টি জানিয়েছিলেন। লন্ডন ব্রিজে হামলার পরে উসমানের কাশ্মীরে হামলার পরিকল্পনাটি আবার নতুন করে সামনে এসেছে।
২০১০ সালে উসমান এবং তার সঙ্গীরা লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে হামলার ছক কষেছিল। কিন্তু নাশকতা চালানোর আগেই পুলিশের জালে ধরা পড়েছিল তারা। লন্ডনের তৎকালীন মেয়র তথা ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও ছিলেন উসমানের দলবলের হিটলিস্টে। ২০১২ সালে দোষী সাব্যস্ত করে লন্ডনের একটি আদালত। ওই মামলার রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘উসমান ও তার সঙ্গী নাজার হুসেন মাদ্রাসায় পড়েছে। কাশ্মীরে বড়সড় নাশকতার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। ব্রিটেনের কম বয়সি মুসলিম ছেলেদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালাতে চায় তারা। এরা সমাজের পক্ষে বিপজ্জনক।’’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, উসমানের জন্ম ব্রিটেনে হলেও পাকিস্তানেই কেটেছে তার শৈশবের দীর্ঘ সময়। ওই সময়ই সে আইএসের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়। ব্রিটেনে ফিরে জোরকদমে জঙ্গি তৎপরতা শুরু করে উসমান। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আইএসের মতাদর্শ এবং জেহাদি কাজকর্ম প্রচার করত সে।
লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে হামলার ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০১২ সালে উসমান-সহ ন’জনের কারাদণ্ড হয়েছিল। আদালত তাকে ‘কনিষ্ঠতম জঙ্গি’ বলে চিহ্নিত করেছিল। জানিয়েছিল, অন্তত ৮ বছর জেলে থাকতে হবে উসমানকে। তার পরে আরও কত দিন, তা নির্ভর করবে উসমানের গতিবিধির উপরে। অর্থাৎ কি না, প্রশাসন যত দিন মনে করবে, তত দিল জেলে বন্দি থাকতে হবে তাকে। কিন্তু ২০১৩ সালে সাজা কমিয়ে আদালত নির্দিষ্ট করে ১৬ বছরের কারাদণ্ড দেয় উসমানকে। যদিও আদালত গত কাল জানিয়েছিল, গত বছর উসমানকে যে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, সেই সিদ্ধান্ত তারা নেয়নি।
উসমানের আট সঙ্গীর মধ্যে দু’জন জেলে। উসমান নিহত হয়েছে। বাকি ছ’জন এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভবিষ্যতে ওই ছ’জনের গতিবিধি কী হবে তা নিয়ে উদ্বেগে ব্রিটেন প্রশাসন। সূত্রের খবর, উসমানের ওই ছ’সঙ্গীর খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আজ বলেন, ‘‘সন্ত্রাসে জড়িত থাকার অপরাধে ধৃত ৭৪ জনকে ইতিমধ্যেই সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এই ধরনের ঘটনা না-ঘটে সে দিকে নজর রাখা হবে।’’