স্বামীর মৃত্যুর পর একটি বইও লেখেন কৌরি। বই প্রকাশের পর তিনি জানান, নিজের এবং তিন সন্তানের জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্যই কৌরি বই লেখার সিদ্ধান্ত নেন। ছবি: সংগৃহীত।
এক বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন। তিন সন্তান নিয়ে রোজকার নিয়মেই দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু স্মৃতির খাতায় এখনও জীবন্ত রয়েছেন তাঁর প্রাণের মানুষ। প্রিয়জনকে হারালে যে কী কষ্ট হয়, তা কাউকে বলে বোঝাতে পারতেন না, তবে এই পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে ধীরে ধীরে কী ভাবে মানিয়ে নেওয়া যায় সেই বিষয়ে একটি বই লিখেছেন কৌরি ডার্ডেন রিচিনস। আমেরিকার উটার সামিট কাউন্টি এলাকার বাসিন্দা তিনি। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ২০২২ সালের ৪ মার্চ কৌরির স্বামী এরিক রিচিনস প্রাণ হারান। শুরুর দিকে সেই শোক সামলে উঠতে পারেননি ৩৩ বছরের কৌরি।
চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি বইও লেখেন কৌরি। বই প্রকাশের পর তিনি জানান, নিজের এবং তাঁর তিন সন্তানের জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্যই বই লেখার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে কৌরি বলেন, ‘‘এই বইটি শুধু আমাদের জীবনেই যে শান্তি ফিরিয়ে নিয়ে আনবে তা শুধু নয়। যাঁরা তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, আমাদের মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন, এই বই তাঁদের জন্যও।’’
কৌরির মন্তব্য, প্রিয়জনের মৃত্যুর পর শিশুদের মনে যে দোলাচল চলতে থাকে, তাঁর লেখা বইটি পড়লে তাদের মন শান্ত হতে পারে। তবে, বই প্রকাশের এক মাসের মধ্যেই লেখিকার প্রসঙ্গে ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ সূত্রে খবর, এরিক যে দিন মারা যান সে দিন মধ্যরাতে পুলিশকে ফোন করে খবর দিয়েছিলেন কৌরি নিজেই। পুলিশ আধিকারিকদের তিনি জানান, এরিকের সঙ্গে মদ্যপান করছিলেন কৌরি। কয়েক ঘণ্টা পর হঠাৎ কৌরি দেখেন, এরিক আর কোনও সাড়া দিচ্ছেন না। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন কৌরি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এরিকের শরীরে প্রচুর পরিমাণ মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
সম্প্রতি কৌরির সঙ্গে এক ব্যক্তির কথোপকথন পুলিশের হাতে আসে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত তাঁর কাছ থেকে যন্ত্রণার উপশমকারী ড্রাগ চাইতেন কৌরি। পুলিশ সূত্রে খবর, মাদককাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার ফলে সেই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে নাকি আরও শক্তিশালী ড্রাগ চাইতেন কৌরি বলে দাবি পুলিশের।পুলিশ জানায়, এরিককে ক্রমাগত সেই ড্রাগ খাইয়ে গিয়েছেন কৌরি। শরীরে ড্রাগের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ৪ মার্চ মারা যান এরিক। সন্দেহ এড়ানোর জন্য নিজে থেকেই পুলিশকে খবর দেন কৌরি। হাতেনাতে প্রমাণ পাওয়ার পর খুনের অভিযোগে কৌরিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।