— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
সৌদি আরবে মঙ্গলবার শেষ হয়েছে তৃতীয় পর্যায়ের বৈঠক। আলোচনার পর কৃষ্ণ সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে সামরিক হামলা না চালানোর শর্তে রাজি হয়েছে রাশিয়া এবং ইউক্রেন দু’দেশই। এমনটাই জানাল হোয়াইট হাউস। পাশাপাশি, হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, দুই দেশই কৃষ্ণ সাগরে নিরাপদে নৌচলাচল নিশ্চিত করতে এবং সামরিক উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিক জাহাজের ব্যবহার বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে।
আগেই ইউক্রেনের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল যে, কৃষ্ণ সাগরে রুশ যুদ্ধজাহাজের অবাধ চলাফেরা কৃষ্ণ সাগর চুক্তির লঙ্ঘনকারী। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা সে দেশের প্রতিনিধিদলের নেতা রুস্তেম উমেরভ বলেন, ‘‘যদি রুশ যুদ্ধজাহাজ কৃষ্ণ সাগরের পূর্ব অংশ থেকে সরে যায়, তা হলে ইউক্রেনেরও আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগের পূর্ণ অধিকার থাকবে।’’ তবে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, রিয়াধে বৈঠকের পর স্থির হয়েছে, কৃষ্ণ সাগরে নিরাপদে নৌচলাচল নিশ্চিত করবে রাশিয়া এবং ইউক্রেন। সামরিক অভিযানের জন্য বাণিজ্যিক জাহাজ ব্যবহার করা হবে না। শীঘ্রই যুদ্ধবন্দিদের প্রত্যর্পণের পথেও হাঁটবে দুই দেশ। সাধারণ নাগরিকদের মুক্তি এবং নির্বাসিত ইউক্রেনীয় শিশুদের ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে যুক্তরাষ্ট্রও। আর এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবে উভয় পক্ষই।
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কৃষ্ণ সাগর শুরু থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, যা প্রভাবিত করেছে বাণিজ্য এবং বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তাকেও। শুরুতে এই কৃষ্ণ সাগর পথেই ইউক্রেনীয় বন্দর দখল করেছিল রুশ নৌবহর, যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ শস্য রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ইউক্রেনের অর্থনীতি। এর জবাবে রুশ যুদ্ধজাহাজ এবং ঘাঁটিগুলিতে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। হামলা হয় ক্রিমিয়াতেও, যেখানে রুশ নৌবাহিনীর বেশির ভাগ অংশ মোতায়েন ছিল। ওই হামলার পরেই বেশির ভাগ জাহাজ অপেক্ষাকৃত নিরাপদ বন্দরে সরিয়ে নেয় রাশিয়া।
প্রসঙ্গত, এই নিয়ে গত দু’মাসে সৌদিতে তৃতীয় যুদ্ধবিরতি বৈঠক করল আমেরিকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব বিষয়ে মঙ্গলবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধে দু’দেশের সঙ্গে পৃথক ভাবে আলোচনা হয়েছে আমেরিকার। গত রবিবার প্রথমে ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পশ্চিম বিষয়ক দূত এবং রুশ-ইউক্রেন সংঘাত সমাধানের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক স্টিভ উইটকফ। সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।