(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (ডান দিকে)। ছবি: এএফপি।
ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বন্ধুত্ব নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’ আমেরিকা। সোমবারই দু’দিনের সফরে রাশিয়া গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি যখন মস্কোয় রয়েছেন, সে সময়ই আমেরিকার তরফে উদ্বেগের কথা শোনা গেল। তা ছাড়া মোদীর রুশ সফরের দিকে যে পশ্চিমি দুনিয়ার নজর রয়েছে, তা সম্প্রতি দাবি করেছিলেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র। তিনি দাবি করেন, মোদীর রাশিয়া সফরে ঈর্ষাকাতর পশ্চিমি দুনিয়া। কূটনৈতিক মহলের অনেকের মতে, নাম না করে আমেরিকাকেই নিশানা করেছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র।
সোমবার মোদীর রাশিয়া সফর নিয়ে প্রশ্ন করা হয় আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারকে। সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়ায় গিয়ে মোদী কী বক্তব্য রাখছেন, সে দিকে আমরা নজর রেখেছি। ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বন্ধুত্ব নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই দিল্লির কাছে আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি।’’ এখানেই থেমে থাকেননি ম্যাথিউ। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘ভারত হোক বা যে কোনও দেশ, যারা রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখছে, তারা অবশ্যই মস্কোকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নির্দেশিকা মেনে চলার কথা মনে করিয়ে দেবে।’’
২২তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে মোদীকে সে দেশে আমন্ত্রণ জানান পুতিন। সেই আমন্ত্রণ পেয়ে সোমবার মস্কোয় গিয়েছেন ভারতে প্রধানমন্ত্রী। সেখানে একাধিক কর্মসূচি ছিল তাঁর। মোদীকে স্বাগত জানানোয় ত্রুটি রাখেনি পুতিন প্রশাসন। মস্কো বিমানবন্দরে মোদীকে স্বাগত জানান রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ডেনিস মান্তুরোভ। ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। পুতিনের সঙ্গে সোমবার নৈশাহারও করেন তিনি। সেখানে একে অপরকে প্রশংসাও করেন। তবে সেই নৈশাহারে ইউক্রেন যুদ্ধ বা আমেরিকা প্রসঙ্গে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে কোনও কথা হয়েছে কি না তা জানা যায়নি।
তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম রাশিয়া সফরে গিয়েছেন মোদী। শুধু তা-ই নয়, ২০২২ সাল থেকে শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে মোদীকে রাশিয়া যেতে দেখা যায়নি। সে দিক থেকে এই সফর খুবই উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। উল্লেখ্য, ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান-সহ বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলির তিরস্কার শুনতে হয়েছে রাশিয়াকে। এমনকি, বহু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। তবে আমেরিকার চোখরাঙানি থাকার পরেও রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব নষ্ট করতে চায়নি ভারত।