মহফুজ আলির এই কার্টুন ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
টেনিদা-কাহিনি থেকে বলিউড, কেউই বাদ নেই। দীর্ঘ প্রতীক্ষার আমেরিকার ভোটের ফল বেরনোর পরে ট্রাম্পের হারের কথা জেনে সমাজমাধ্যমের চর্চায় এমন নানা স্বাদের ফোড়ন!
ভোট আমেরিকায় হলেও চর্চায় দেশের নেট-জনতার যোগদান ছিল চোখে পড়ার মতো। থাকারই কথা। খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক’মাস আগে ট্রাম্পের সমর্থনে সে দেশে গিয়ে স্লোগান দিয়ে এসেছেন ‘অব কী বার, ট্রাম্প সরকার’। তারপরে ভোটে ট্রাম্প হেরে যেতে মোদীর বক্তৃতার পুরনো ভিডিয়োই ফেসবুক-টুইটারে শেয়ার করেছেন অনেকে। সঙ্গে টিপ্পনী, ‘‘এই হার কে কি তাহলে শুধু ট্রাম্পেরই হার বলা যায়?’’ কারও মতে, ‘‘অব কী বার, ট্রাম্পের হার!’’
হার যখন ঠারেঠোরে বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছে, তখনও ট্রাম্প টুইট করেছেন, ‘‘এই নির্বাচন আমিই জিতেছি’’ বলে। বাইডেনের জয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরে সেই টুইট তুলে এনে নেট-জনতার বলিউডি সংলাপ, ‘‘হার কর জিতনেওয়ালো কো বাজিগর কহতে হ্যায়!’’ টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদের আদলে তৈরি ছবিতে দরজা দিয়ে ট্রাম্পের ছায়ার বেরিয়ে যাওয়া, স্ট্যাচু অব লিবার্টির হাতে গুলতিতে ট্রাম্পের পুতুল উড়িয়ে দেওয়ার মতো পোস্টার শনিবার রাত থেকেই ভাইরাল। মহফুজ় আলির আঁকা কার্টুনে ট্রাম্পের টুপি মজাচ্ছলে তাঁর দিকেই ছুড়ে দিচ্ছেন বাইডেন। সঙ্গে লেখা, ‘‘বাই দেন’’! #বাইবাইট্রাম্প, #ইউআরফায়ারড— এর মতো হ্যাশট্যাগে ফল ঘোষণার পর থেকেই এমন নানা মিম-ক্যাচলাইন শেয়ার হয়েছে দুনিয়া জুড়ে।
জো বাইডেনের কাছে হার কার্যত নিশ্চিত হয়ে গেলেও তা মানতে চাননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। কখনও গণনা বন্ধের হুমকি দিয়েছেন, কখনও আদালতে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এমন মনোভাবেরই মিল রসিক বাঙালি খুঁজে পেয়েছে টেনিদা-কাহিনি ‘ক্রিকেট মানেঝিঁঝিঁ’-তে। টেনিদার নির্দেশে ক্রিকেট খেলতে নেমে প্যালারামের যে অবস্থা হয়, তারই অংশবিশেষ ঘুরেছে মোবাইল থেকে মোবাইলে।
‘‘হাঁটুর চোটটা সামলে নিয়ে ব্যাট দিয়ে স্টাম্পগুলো সব ঠিক করতে যাচ্ছি—হঠাৎ হতচ্ছাড়া আমপায়ার বলে বসল—তুমি আউট, চলে যাও। আউট? বললেই হল? আউট হবার জন্যেই এত কষ্ট করে প্যাড আর পেন্টলুন পরেছি নাকি? আচ্ছা দ্যাখো একবার। বয়ে গেছে আমার আউট হতে! বললাম, আমি আউট হব না। এখন আউট হবার কোনও দরকার দেখছি না আমি। আমি ঠিক বুঝেছিলাম ওরা আমপায়ার নয়, ভ্যামপায়ার। কুইনিন চিবোনোর মতো যাচ্ছেতাই মুখ করে বললে: দরকার না থাকলেও তুমি আউট হয়ে গেছ। স্টাম্প পড়ে গেছে তোমার। পড়ে গেছে তো কী হয়েছে—আমি রেগে বললাম, আবার দাঁড় করিয়ে দিতে কতক্ষণ? ও-সব চালাকি চলবে না স্যার—এখনও আমার ওভার-বাউন্ডারি করা হয়নি।’’ উদ্ধৃত এই অংশটুকুর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ট্রাম্পের ছবি।
বাইডেন-কমলার জয়ের স্বাদেও মজেছে মাছপ্রেমী বাঙালি। ইউটিউবার সাওন দত্ত কমলালেবু দিয়ে কাতলা মাছের পদ তৈরির ভিডিয়ো রিপোস্ট করে উদযাপন করেছেন ভোটের ফল। আমেরিকায় নিজের বন্ধুদের ‘অচ্ছে দিনে’র শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। ওই ভিডিয়োয় সাওনের ছড়া , ‘‘আমেরিকাতে ইলেকশন আর রান্নাঘরে ফিশ, দুটোতেই চাই কমলা এ বার এটাই আমার উইশ/ কমলা-কাতলা আমার নতুন ফেভারিট, কমলা-বিডেন জিতলে আই উইল ডিস্ট্রিবিউট দ্য সুইট।’’
আমেরিকার ভোটে দীর্ঘ গণনা চলা নিয়েও চর্চা চলছিল সমাজমাধ্যম জুড়ে। সেই প্রসঙ্গেই রসিকতা হয়েছে উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উন-কে নিয়ে। তাঁর ছবি দেওয়া পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘‘আমি সবসময় বলি ভোটে একজনের বেশি প্রার্থী থাকলেই জটিলতা বাড়ে।’’