ভাবী ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের সঙ্গে চ্যাম্প ও মেজর। ছবি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে।
‘‘হোয়াইট হাউসের লনে একটা কুকুরের চেন ধরে ঘুরে বেড়ালে কেমন লাগবে। কী জানি, আমার ব্যাপারটা ঠিক বলে মনে হচ্ছে না’’, স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে এক সভায় বলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন জো বাইডেন। সঙ্গে পোষা জার্মান শেফার্ডের সঙ্গে নিজের ছবি। বলেছিলেন, ‘‘হোয়াইট হাউসে কুকুরদের ফেরানো যাক।’’ বাইডেনের জয়ের পরে নেটিজ়েনেরা বলতে শুরু করেছেন, তাঁর হাত ধরে হোয়াইট হাউসে ফিরতে চলেছে
‘ডোটাস’ অর্থাৎ ‘ডগস অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস’।
বস্তুত হোয়াইট হাউসে পশুশালার কাহিনি এমনই চিত্তাকর্ষক যে ট্রাম্প জমানায় সেই শূন্যস্থান নিয়ে আলোচনা হয়েছে বিস্তর। ইতিহাস বলছে, হোয়াইট হাউসের প্রথম যে সারমেয় বাসিন্দাকে নিয়ে হইচই হয় তার নাম ‘ল্যাডি বয়’। প্রেসিডেন্ট ওয়ারেন হার্ডিংয়ের পোষা এই এয়ারডেল টেরিয়ারকে নিয়ে নিয়মিত সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হত। ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন, আলাস্কায় বেড়াতে গিয়ে স্কটিশ টেরিয়ার ‘ফালা’কে ফেলে এসেছিলেন প্রেসিডেন্ট। তার পরে তাকে ফেরাতে সরকারি কোষাগারের লক্ষ লক্ষ ডলার ব্যয় করে জাহাজ পাঠিয়েছিলেন। রুজভেল্ট জবাবে বলেন, ‘‘এ বার আমার কুকুরকেও নিশানা করা হচ্ছে। ও কিন্তু এটা মোটেই পছন্দ করছে না।’’
পোষা বিগ্ল হাউন্ডের দুই কান ধরে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে পশুপ্রেমীদের একাংশের তোপের মুখে পড়েছিলেন আর এক প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন। অবাক হয়ে হোয়াইট হাউসের আর এক প্রাক্তন বাসিন্দা হ্যারি এফ ট্রুম্যান বলেছিলেন, ‘‘এতে সমালোচনার কী আছে? হাউন্ড কুকুরকে ও ভাবেই ধরতে হয়।’’ বুশ পরিবারের পোষ্য স্পট আবার বাবা-ছেলে, দুই প্রেসিডেন্টের জমানাতেই হোয়াইট হাউসে থেকেছে।
ক্লিন্টন পরিবারের বেড়াল সকস আর কুকুর বাডির মধ্যে বিশেষ বনিবনা হয়নি। বিল ক্লিন্টন বলেছিলেন, ‘‘এর চেয়ে ইজ়রায়েলি-প্যালেস্তাইনিদের মধ্যে মধ্যস্থতার কাজ সফল ভাবে করেছি।’’ বারাক ও মিশেল ওবামাকে পর্টুগিজ ওয়াটার ডগ উপহার দিয়েছিলেন টেড কেনেডি, যাঁর দাদা জন এফ কেনেডির জমানাতেও হোয়াইট হাউসের পশুশালা ছিল আকর্ষণীয়। বাইডেনের আমলে হোয়াইট হাউসের সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে চলেছে দুই জার্মান শেফার্ড, ‘চ্যাম্প’ আর ‘মেজর’। ভাইস-প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ে বাইডেনের সঙ্গেই ছিল ‘চ্যাম্প’। আর ‘মেজর’-কে ডেলাওয়্যারের পরিত্যক্ত পশুদের এক আশ্রয়শালা থেকে এনে পরিবারের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন বাইডেনরা। ফলে হোয়াইট হাউসের লনে বহু দিন পরে ফের দেখা মিলবে সারমেয় বাসিন্দাদের।