তেল আভিভ থেকে জেরুসালেম। মে মাসেই নিজেদের দূতাবাস সরিয়ে ফেলতে মরিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা। শোনা যাচ্ছে, ইজরায়েলে নয়া মার্কিন দূতাবাসের উদ্বোধন হতে পারে ১৪ মে। ইজরায়েলের জন্মের ৭০ বছর পূর্তির দিনেই ফিতে কাটতে চাইছে ওয়াশিংটন!
জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে এমনিতেই আমেরিকার উপরে খাপ্পা প্যালেস্তাইন। তিক্ততা বা়ড়ল ১৪ মে-কে ঘিরেও। গোটা আরব দুনিয়াকে উস্কানি দিতেই আমেরিকা এমন দিন বেছে নিতে চাইছে বলে মন্তব্য করেছেন প্যালেস্তাইনি নেতারা। ওয়াশিংটন অবশ্য এখনও কোনও চূড়ান্ত দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি। তবে জল্পনা বাড়িয়েছে এক ইজরায়েলি মন্ত্রীর টুইট। ১৪ মে-কে প্যালেস্তাইন ‘বিপর্যয়ের দিন’ বললেও, ইজরায়েল বরাবর এটিকে নিজেদের স্বাধীনতা দিবস হিসেবেই উদ্যাপন করে এসেছে। দূতাবাস উদ্বোধনে ট্রাম্প তাই ওই দিনটিকেই বেছে নেওয়ায় আগাম অভিনন্দন জানিয়েছেন ওই মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘এর চেয়ে ভাল উপহার আর কিছু হতেই পারে না। ধন্যবাদ বন্ধু।’’
কূটনীতিকেরা বলছেন, ইজরায়েলকে উৎসবের মেজাজে দেখেই নতুন করে ফুঁসতে শুরু করেছে প্যালেস্তাইন। ক্ষোভ জমছে আরব দুনিয়ায়। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নিশানায় রেখেই আবারও প্রশ্ন উঠছে— জেরুসালেম কার? এখানকার খ্রিস্টানদের উপরে ইজরায়েলের ‘ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে রবিবার জেরুসালেমের গুরুত্বপূর্ণ একটি গির্জা ‘দ্য চার্চ অব দ্য হোলি সেপলখর’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রাচীন এই শহরটি একই সঙ্গে মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের পবিত্রভূমি। অথচ অভিযোগ, ১৯৮০-তে জবরদখল করেই শহরটিকে নিজেদের রাজধানী বলে ঘোষণা করে ইজরায়েল। তারও আগে থেকে চলছিল একের পর এক ‘অবৈধ’ ইহুদি বসতি গড়ার কাজ। প্যালেস্তাইন যা কখনওই মেনে নেয়নি। এত দিন জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসেবে মান্যতা দেয়নি বাকি দুনিয়াও। গত বছর ট্রাম্প তাই উল্টো পথে হাঁটতেই প্রতিবাদে নামে বিশ্বের একটা বড় অংশ। ট্রাম্পের জেরুসালেম ঘোষণা মানতে চায়নি রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ১৮টি স্থায়ী সদস্য দেশও। আমেরিকা তবু অনড়ই। প্রায় শেষের মুখে জেরুসালেমে নয়া মার্কিন দূতাবাস ভবন তৈরির কাজও।
ব্রিটেন, ফ্রান্স, তুরস্ক-সহ কিছু দেশের ‘কূটনৈতিক মিশন’ জেরুসালেমে আছে। কিন্তু সেগুলিকে ‘দূতাবাস’ বলা হয় না। আন্তর্জাতিক আইন মেনেই সব দেশের দূতাবাস রয়েছে তেল আভিভে। জেরুসালেমকে ইজরায়েলের ‘বৈধ রাজধানী’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতেই ট্রাম্প তড়িঘড়ি দূতাবাস সরাতে চাইছেন বলে মত কূটনীতিকদের একাংশের।