এলএসি-তে চিনা আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য আমেরিকার প্রতিরক্ষা নীতি বিলে শি চিনফিং সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
বলপ্রয়োগের পরিবর্তে কূটনৈতিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে মতবিরোধ মেটানো উচিত চিনের। লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (অ্যাকচুয়াল লাইন অব কন্ট্রোল বা এলএসি) বরাবর চিনা আগ্রাসন নিয়ে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করে মঙ্গলবার এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে আমেরিকার কংগ্রেস। ওই প্রস্তাবে এলএসি-তে আগ্রাসনের প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকতে চিনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং সেনেট— কংগ্রেসের দুই কক্ষেই ৭৪ হাজার কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা নীতি বিল পাশ হয়েছে। ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট (এনডিএএ) নামের ওই বিলের একটি প্রস্তাবে এলএসি-তে চিনা আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য শি চিনফিং সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে। ওই বিলে প্রস্তাবি রেখেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কংগ্রেস সদস্য রাজা কৃষ্ণমূর্তি। সেনেটে যাওয়ার আগে নিম্ন কক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ-এ বিলটি পাশের সময় একটি সংশোধনীর মাধ্যমে এই প্রস্তাবনাটি যুক্ত করা হয়। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, এতেই বোঝা যায় যে এলএসি তথা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিজেদের ‘বন্ধু’দেশের বিরুদ্ধে চিনা সামরিক বাহিনীর আগ্রাসন নিয়ে আমেরিকা কতটা উদ্বিগ্ন। আমেরিকার কংগ্রেসের দুই কক্ষেই কৃষ্ণমূর্তির এই প্রস্তাবনা বিপুল সমর্থন পেয়েছে।
চলতি বছরের মে থেকেই পূর্ব লাদাখের এলএসি বরাবর এলাকায় চিনা আগ্রাসনের ফলে শিং চিনফিং সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। লাদাখ নিয়ে দফায় দফায় সামরিক এবং কূটনৈতিক স্তরে বৈঠক হলেও এ নিয়ে সমাধানসূত্র অধরাই রয়েছে। এই আবহে এনডিএ-র সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবনায় আমেরিকার কংগ্রেসের সমর্থন যে চিনের কাছে কড়া বার্তা হিসেবেই পৌঁছবে, তা মনে করছে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ওই প্রস্তাবনাটি যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত সেই কৃষ্ণমূর্তি বলেছেন, ‘‘কূটনৈতিক মাধ্যমের সাহায্যে ভারতের মতো মিত্র দেশের সীমান্তে অচলাবস্থা মেটাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমেরিকা।’’
আরও পড়ুন: এইচআইভি পজিটিভ ছিলেন স্টিভ জোবস! ফের বিতর্ক উস্কে দিল উইকিলিকস
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপুঞ্জে আশ্বাস ভারতের, টিকা শুরু কানাডায়
শুধুমাত্র ভারত সীমান্তেই নয়, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলেও চিনের আগ্রাসন নিয়ে উদ্বিগ্ন আমেরিকার কংগ্রেস। দক্ষিণ চিন সাগর, পূর্ব চিন সাগরে শিং চিনফিং সরকারের বিরুদ্ধে বার বারই দখলদারির অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে ওই অঞ্চলে স্থিতাবস্থায় বিঘ্ন ঘটছে বলেও বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, এই ‘দখলদারি’ যে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী, তা-ও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে এই বিলে।