সাবধান: ‘ভিড় করবেন না’— বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বার্তা দাঙ্গা-পুলিশের। রবিবার করোনা আবহের মধ্যেই হংকংয়ে মৌনী মিছিল করেন কয়েক হাজার মানুষ। রয়টার্স
করোনা আবহের মধ্যেই গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলন ফের বড় আকার নিচ্ছে হংকংয়ে। চিনের প্রস্তাবিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে রবিবার কাউলুন শহরের জরডান থেকে মং কক পর্যন্ত মৌনী মিছিল করেন কয়েক হাজার মানুষ। এ দিনের মিছিল এমনিতে শান্তিপূর্ণ থাকলেও তার মধ্যেই ৫৩ জন প্রতিবাদীকে গ্রেফতার করেছে চিনা পুলিশ। রবিবারের এই মিছিল আটকাতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছিল চিনা সশস্ত্র পুলিশ। কয়েক জায়গায় মিছিলে যোগদানকারীদের উপরে লঙ্কার গুঁড়োও স্প্রে করেছে তারা। পুলিশের দাবি, একাধিক জায়গায় প্রতিবাদীরা রাস্তা আটকানোর চেষ্টা করেছেন। যদিও বিক্ষোভকারীরা চিনা পুলিশের এই দাবি উড়িয়ে বলেছেন, ওরা মিথ্যে কথা বলছে।
দীর্ঘদিন ব্রিটিশ শাসনে থাকা হংকংয়ের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করতে বেশ কিছু দিন ধরেই সক্রিয় চিনের কমিউনিস্ট পার্টি। চিনের মূল ভূখণ্ডের নাগরিকরা যেমন রাষ্ট্রের কড়া নজরদারিতে থাকেন, হংকংয়ের নাগরিকদের ক্ষেত্রেও তেমনই করতে চায় তারা। প্রতিবাদীদের অভিযোগ, শি চিনফিং ক্ষমতায় আসার পরে হংকংয়ের নাগরিকদের উপর চাপ বেড়েছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতেই গত বছর থেকে গণতন্ত্রের দাবিতে পথে নেমেছেন হংকংয়ের লক্ষ লক্ষ মানুষ। প্রতিবাদীদের অভিযোগ, জাতীয় নিরাপত্তার নাম করে নয়া আইন তৈরি করে হংকংয়ের মানুষের যাবতীয় গণতান্ত্রিক ক্ষমতা কেড়ে নিতে মরিয়া শিনফিং প্রশাসন। পাশাপাশি সন্ত্রাস দমনের নামে আমজনতার মানবাধিকারও ধ্বংস করতে চায় চিন। এ নিয়ে আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ একাধিক দেশ সরব হয়েছে। চিনা অর্থনীতির অন্যতম ভরকেন্দ্র হংকংয়ে চিন নতুন আইন লাগু করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রিটেনও চিনের দমনমূলক নীতির কড়া সমালোচনা করেছে। যদিও এ সবে পাত্তা দিতে নারাজ চিনের বক্তব্য, তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকার দেশগুলি। হংকংয়ের প্রতিবাদ-আন্দোলন দমন করতে মরিয়া শি চিনফিং সরকার চলতি মাসেই প্রস্তাবিত আইনটি পাশ করিয়ে নিতে চায়। এ জন্য রবিবার থেকে চিনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে বিলটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম জ়িনহুয়া।
এক দিকে করোনা নিয়ে বিশ্বের প্রায় সব ক’টি দেশের সমালোচনা, অন্য দিকে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য-সহ একাধিক বিষয়ে মতান্তর। তার মধ্যেই ভারতের ভূখণ্ড দখল করতে চিনের আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হংকং নিয়ে শি চিনফিং সরকারের অতিসক্রিয়তার পিছনে অন্য অঙ্ক দেখছেন কূটনীতিকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, বিদেশের পাশাপাশি নিজের দেশেও বেশ চাপে শি।