রাষ্ট্রপুঞ্জে জোর ধাক্কা খেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দু’দিন আগেই জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী বলে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর তার জেরেই এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে রীতিমতো একঘরে হয়ে পড়ল আমেরিকা। শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪ সদস্য রাষ্ট্র ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মত দিলেন। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের শেষে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইজরায়েলি ও প্যালেস্তিনীয়দের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই জেরুসালেমের অবস্থান ঠিক করতে হবে।
দিন তিনেক আগেই জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী বলে স্বীকৃতি দেয় আমেরিকা। ঘোষণার পর থেকে রীতিমতো ফুঁসতে শুরু করে প্যালেস্তাইন। ক্ষোভ উগড়ে দেয় গোটা আরব দুনিয়া। ইতিমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, জেরুসালেম সমস্যা প্যালেস্তাইন ও ইজরায়েলের। জেরুসালেমকে দু’দেশের রাজধানী হিসেবেই ব্যবহার করা যেতে পারে। যত ক্ষণ না তা হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন জেরুসালেমের উপর নির্দিষ্ট কোনও দেশের দখলদারি বরদাস্ত করবে না।
তার পরই রীতিমতো জরুরি ভিত্তিতে শুক্রবার বৈঠক ডাকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। সেই বৈঠকেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওই সিদ্ধান্তই গৃহীত হয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে চিন, ফ্রান্স, রাশিয়া, ব্রিটেন, বলিভিয়া, মিশর, ইথিওপিয়া, ইতালি, জাপান, কাজাখস্তান, সেনেগল, সুইডেন, ইউক্রেন এবং উরুগুয়ে সবাই একে একে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখে। তবে, রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালে ওয়াশিংটনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, রাষ্ট্রপুঞ্জের এই অবস্থান ইজরায়েলের প্রতি তাদের বিতৃষ্ণার পরিচয় দিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্যালেস্তাইনে। ফাইল চিত্র।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের বিতর্কিত ঘোষণা: জেরুসালেম ইজরায়েলের রাজধানী
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-বিরোধী ঝড় বিশ্ব জুড়ে
নিরাপত্তা পরিষদের ওই বৈঠকের শুরুতে মধ্য প্রাচ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ দূত নিকোলাই ম্লাজেনভ জেরুসালেম থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বলেন, ‘‘মার্কিন ঘোষণার ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে হিংসা ছড়িয়ে পড়তে পারে। কোনও রকম উস্কানি দেওয়া থেকে দূরে থেকে সব পক্ষের উচিত দ্রুত আলোচনার বসা। ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন- উভয়ের কাছেই জেরুসালেম তাদের জীবনের কেন্দ্রবিন্দু। একমাত্র আলোচনা ছাড়া এই সমস্যা সমাধানের কোনও উপায় নেই।”