রাষ্ট্রপুঞ্জ। —ফাইল চিত্র।
ইউক্রেনে লাগাতার যুদ্ধাপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে রুশ সেনা। শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে প্রকাশিত এক তদন্ত রিপোর্টে এই কথা বলা হয়েছে। গুরুতর যুদ্ধাপরাধের মধ্যে রয়েছে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন এবং ধর্ষণ।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের দু’বছর পার হয়ে গিয়েছে। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটির বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রমাগত রুশ সেনার অত্যাচারের খবর পেয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। সেই কমিশনের প্রধান এরিক মোসে শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমাদের হাতে যা তথ্যপ্রমাণ রয়েছে তা থেকে স্পষ্ট, রুশ কর্তৃপক্ষ ইউক্রেনে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছেন, যা যুদ্ধপরাধের শামিল।’’ এরিক জানান, তাঁরা ১৬ বার ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ৮০০ জনেরও বেশি মানুষের সঙ্গে কথা বলে এই রিপোর্ট তৈরি করেছেন।
ইউক্রেনীয় বন্দিদের উপরে রুশ সেনারা যা অত্যাচার চালায় তা ‘ভয়াবহ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের এই কর্তা। তিনি আরও জানান, রুশ সেনাদের হাতে ধর্ষণ-সহ বিভিন্ন ধরনের যৌন হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে ইউক্রেনীয় মহিলাদের। ধর্ষণ করা হচ্ছে ইউক্রেনের পুরুষ বন্দিদেরও। তদন্ত চালাতে গিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরা জেনেছেন যে, ইউক্রেনীয় শিশুদের তাদের পরিবার থেকে ছিনিয়ে নিয়ে রুশ অধিকৃত এলাকায় চালান করে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে চলেছে।
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে এই প্রথম সে দেশে ‘সাংস্কৃতিক লুণ্ঠন’-এর বিষয়ে তদন্ত করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরা। ২০২২-এর মার্চ মাসে ইউক্রেনের খেরসন শহর দখল করেছিল রুশ বাহিনী। আট মাস পরে অবশ্য ইউক্রেনীয় সেনারা খেরসন পুনর্দখল করে নেয়। কিন্তু তার আগেই, অক্টোবর-নভেম্বরে, খেরসনের শিল্প সংগ্রহশালা লুঠ করে রুশ সেনারা। দশ হাজারেরও বেশি শিল্পসামগ্রী তারা এই সংগ্রহশালা থেকে রুশ-অধিকৃত ক্রাইমিয়ায় পাঠিয়ে দেয়। নিয়ে যায় বহু পুরনো নথিও। এই লুঠতরাজকেও ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।