ইউক্রেনের জ়াপোরিজিয়ায় একটি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ওই হামলায় এক সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়। বুধবার সেখানে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ করছে ইউক্রেন সেনা। পিটিআই
জাঁকিয়ে শীত পড়ার আগে যুদ্ধে ইতি টানার আশায় ছিল ইউক্রেন। কিন্তু যুদ্ধ শেষের কোনও ক্ষীণ সম্ভাবনাও কেউ দেখতে পাচ্ছেন না। বরং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে নিশানা করে একটানা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জেরে অন্ধকারে দেশটার একাংশ। প্রবল ঠান্ডায় বিদ্যুৎহীন বহু এলাকা। বাড়ির রুম হিটার কাজ করছে না। পানীয় জলের লাইন অকেজো। এ অবস্থায় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের মানুষকে ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে আশ্রয় শিবির খুলছে কিভ সরকার।
ঠান্ডা পড়ার আগে যুদ্ধ থামানোর কথা ভাবছিল ইউক্রেন। অথচ প্রতিপক্ষ রাশিয়া এখন যুদ্ধকেই হাতিয়ার করছে। গত কাল রাতের সাংবাদিক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন, দেশ জুড়ে বিশেষ আশ্রয় শিবির খোলা হবে। সেখানে বিদ্যুৎ থাকবে, ঘর গরম রাখার ব্যবস্থা থাকবে, জল, ইন্টারনেট, মোবাইল নেটওয়ার্ক, ওষুধ, বিনামূল্যে যন্ত্রপাতি চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
আজও ইউক্রেনের বেশ কিছু এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। সম্প্রতি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জেরে ১ কোটি বাসিন্দা বিদ্যুৎহীন হয়েছিলেন দীর্ঘক্ষণ। জ়েলেনস্কি বলেন, ‘‘রাশিয়া যদি বারবার বিধ্বংসী হামলা চালায়, তা হলে ফের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যহত হবেই। কিছু করার নেই। সে ক্ষেত্রে এই আশ্রয় শিবিরগুলি মানুষের উপকারে লাগবে।’’ ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহাল জানিয়েছেন, প্রতি দিন ৮৫০০ পাওয়ার জেনারেটর আমদানি করা হচ্ছে দেশে।
গত সপ্তাহে প্রথম বরফ পড়েছে ইউক্রেনে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হওয়া যুদ্ধে এ পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসনের আশঙ্কা, এই শীতে না জানি আরও কত শত মানুষ প্রাণ হারাবেন।
শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্র নয়, একের পর এক জ্বালানি কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে মস্কো। নিপ্রো নদীর পাশে খেরসন থেকে পিছু হটতে হয়েছে রুশ সেনাকে। তার পরে তারা হামলার গতি আরও বাড়িয়েছে। যত দিন খেরসন মস্কোর দখলে ছিল, তত দিনে রুশ বিলবোর্ড, প্রচারপত্রে ছেয়ে গিয়েছিল অঞ্চলটা। ইউক্রেন ওই এলাকা ছিনিয়ে নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে যাবতীয় রুশ চিহ্ন সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যদিও তাদের হামলা অব্যাহত রয়েছে।
আজ জ়াপোরিজিয়ার একটি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে এসে পড়ে ক্ষেপণাস্ত্র। ওই হামলার ঘটনায় একটি সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত শিশুটির মা এবং এক চিকিৎসককে ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে পরে উদ্ধার করা হয়। আঞ্চলিক গভর্নর অলেকজ়ান্ডার স্টারুখ সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হামলার কথা জানিয়েছেন। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেনি।
পূর্ব ইউক্রেনে যুদ্ধ অব্যাহত। ডনেৎস্ক শহরে গোলাবর্ষণ চলেছে দিনভর। রুশ অধিকৃত ক্রাইমিয়ায় মস্কোর এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম আজ ইউক্রেনের দু’টি ড্রোন হামলা আটকে দিয়েছে। রাশিয়ার নিযুক্ত গভর্নর মিখাইল রাজ়ভোজ়ায়েভ জানিয়েছেন, তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি।