বিজয় মাল্য।—ফাইল চিত্র।
বিজয় মাল্যকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে। যার পর তাঁর বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপি মামলার তদন্ত শুরু করতে পারবেন গোয়েন্দারা। জানিয়ে দিল লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। কিংফিশার কর্ণধারকে দেশে ফেরানো নিয়ে সোমবার সেখানে ভারতীয় গোয়েন্দাদের আবেদনের শুনানি চলছিল। তবে নিম্ন আদালতের এই সিদ্ধান্তকে উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন মাল্য। সেক্ষেত্রে আগামী ১৪ দিনের মধ্যে আবেদন জানাতে হবে তাঁকে। সিবিআইয়ের যুগ্ম ডিরেক্টর এ সাই মনোহরের নেতৃত্বে সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের একটি যৌথ দল এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডে রয়েছেন। মামলা কোন পথে এগোয়, সে দিকে নজর রাখছেন তাঁরা।
প্রায় ৯০০০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি মামলায় অভিযুক্ত বিজয় মাল্য। ধুঁকতে থাকা কিংফিশার বিমান সংস্থায় প্রাণ সঞ্চার করতে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং অন্যান্য ব্যাঙ্ক থেকে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা তোলেন তিনি। তবে ঋণ না মিটিয়েই, ২০১৬ সালের গোড়ায় সপরিবারে দেশ ছেড়ে চম্পট দেন। সেই থেকে লন্ডনের কাছে এক প্রাসাদোপম বাড়িতে রয়েছেন তিনি। তাঁকে দেশে ফেরাতে গত দু’বছর ধরে লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। এতদিনে সাফল্য পেল তারা। তবে মাল্য উচ্চ আদালতে আবেদন করলে তার পর কী হয়, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে তাদের।
এর আগে গতবছর এপ্রিল মাসে প্রত্যর্পণ পরোয়ানা জারি হলে গ্রেফতার করা হয়েছিল মাল্যকে। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই জামিনে মুক্ত হয়ে যানি তিনি। তার পরই ভারত সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা যায় তাঁকে। নিজেকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন তিনি। এমনকি নিজের ঘাড় থেকে ঋণের দায়ও ঝেড়ে ফেলেন। দাবি করেন, ‘‘আমি এক পয়সাও ঋণ নিইনি। সমস্তটাই নিয়েছিল কিংফিশার এয়ারলাইন্স। ব্যবসা ডুবে যাওয়াতেই টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়নি। আমি শুধুমাত্র গ্যারেন্টার, কোনও জালিয়াত নই।’’
আরও পড়ুন: সংঘাতের জের, শেষ পর্যন্ত ইস্তফাই দিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেল
আরও পড়ুন: ছাড়া হচ্ছে না বিজেপি কর্মীর দেহ, আসানসোলে শুরু অবরোধ, বন্ধের ডাক দেওয়ার ভাবনা
মামলার শুনানির দিন কয়েক আগে আবার ঋণের সমস্ত টাকাটাই ফেরত দিতে উদ্যোগী হন মাল্য। টুইটারে লেখেন, ‘‘আমি ১০০ শতাংশ টাকাই ফেরত দিতে চাই। দয়া করে ফেরত নিন।’’
সোমবার আদালতে ঢোকার আগেও আত্মবিশ্বাস ধরা পড়ে তাঁর গলায়। সেখানে হাজির সংবাদমাধ্যমকে বলেন,‘‘আদালত যাই সিদ্ধান্ত নিক, আমার লিগাল টিম সব সামলে নেবে। সেই বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে। সত্যি সত্যিই ঋণের টাকা ফেরত দিতে চাই আমি। তাই ওই টুইট করেছিলাম। এর সঙ্গে প্রত্যর্পণ মামলার কোনও যোগ নেই।’’ আদালত প্রত্যর্পণের নির্দেশ দেওয়ার পর অবশ্য এখনও পর্যন্ত তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।