বাঁ দিকে, শেখ হাসিনা। ডান দিকে, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বাংলাদেশ ছেড়ে পালানোর পর ব্রিটেনের কাছে ‘নিরাপদ আশ্রয়’ চেয়েছিলেন সদ্যপ্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই আবেদন ব্রিটেন সরকার এখনও পর্যন্ত গ্রহণ না করলেও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিল তারা। মঙ্গলবার প্রকাশিত সেই বিবৃতিতে ব্রিটেন জানিয়েছে, তারা গত কয়েক দিনে বাংলাদেশে ঘটে-যাওয়া রাজনৈতিক উত্থানের ঘটনার ‘নিরপেক্ষ তদন্ত’ চায়। তারা এ-ও চায় যে, ওই তদন্ত হোক রাষ্ট্রপুঞ্জের নেতৃত্বে স্বাধীন ভাবে। যদিও দীর্ঘ ওই বিবৃতিতে হাসিনার নাম একটি বারও উল্লেখ করেনি তারা। তাঁকে ব্রিটেনে ‘নিরাপদ আশ্রয়’ দেওয়ার বিষয়েও কোনও কথা বলেনি।
প্রসঙ্গত, আমেরিকারও বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদল এবং তার জন্য হওয়া আন্দোলনে মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চেয়েছে। আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, ‘‘আমরা মনে করি বাংলাদেশের আইন এবং গণতান্ত্রিক নীতিকে মাথায় রেখেই সেখানে নতুন সরকার গঠন করা হবে। সেখানে যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, অবশ্যই তার তদন্ত হওয়া উচিত।’’ হাসিনাকে আমেরিকা রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, হাসিনা আমেরিকার সরকারের কাছে আশ্রয় চেয়েছেন বলে অন্তত তাঁর কিছু জানা নেই।
মঙ্গলবার বাংলাদেশের রাশিয়ার দূতাবাসের তরফেও বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে মস্কোর তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি চলছে, তা একান্ত ভাবেই বাংলাদেশের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে তারা মনে করে। তবে বাংলাদেশ যে হেতু রাশিয়ার বন্ধু দেশ, তাই তারা চায়, সেখানে দ্রুত সাংবিধানিক নিয়মনীতি ফিরে আসুক।
সোমবার ঢাকা থেকে এসে গাজ়িয়াবাদে নামার পর থেকে হাসিনা এখনও ভারতেই রয়েছেন। সূত্রের খবর, তিনি রয়েছেন গাজ়িয়াবাদের হিন্দন বিমানঘাঁটিতেই। বাংলাদেশ থেকে তাঁকে নিয়ে যেখানে এসে অবতরণ করেছিল বাংলাদেশ বায়ুসেনার বিমান। হাসিনা অবশ্য ভারতের কাছ থেকে রাজনৈতিক আশ্রয় চাননি। একটি অসমর্থিত সূত্রের দাবি, ভারতে আসার পরে বহু বার তিনি লন্ডনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার আবেদনও করেছেন। সেই অসমর্থিত সূত্রেরই দাবি, সেই আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে ব্রিটেন। এ ব্যাপারে কোনও পক্ষ প্রকাশ্যে কিছু না জানালেও মঙ্গলবার বাংলাদেশ নিয়ে ব্রিটেন যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে হাসিনার নামোল্লেখ না-থাকাকে অনেকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছেন।