দারা খোসরোশাহি। —ফাইল চিত্র।
সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে অ্যাপ ক্যাব সংস্থা উবর-এর কর্ণধার দারা খোসরোশাহি। অবশেষে ক্ষমাও চেয়ে নিলেন তিনি। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, জামাল খাশোগির সঙ্গে যা ঘটেছে, তা কোনও ভাবেই ক্ষমা করা যায় না।
সৌদি সরকার খাশোগি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করলেও, রবিবার তাদের হয়ে সওয়াল করতে দেখা যায় খোসরোশাহিকে। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করার বদলে, সৌদি সরকার ‘ভুল করে ফেলেছে’ বলে একটি সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন তিনি। তা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে সোমবার নিজের টুইটার হ্যান্ডলে সাফাই দেন খোসরোশাহি। তিনি লেখেন, ‘জামাল খাশোগির সঙ্গে যা হয়েছে, তা ক্ষমা করা যায় না। ভোলার প্রশ্ন তো ওঠেই না। এই ঘটনাকে নেহাত ভুল বলে উল্লেখ করা একেবারেই উচিত হয়নি আমার।’
উবরের অন্যতম বৃহত্তম অংশীদার সৌদি সরকার। সংস্থার বোর্ড অব ডিরেক্টরস-তেও সৌদি প্রশাসনের প্রতিনিধি রয়েছেন। তার জন্যই খোসরোশাহি সৌদি সরকারের পক্ষ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। তবে উবর কর্ণধারের দাবি, ‘আগু পিছু না ভেবে সেই মুহূর্তে ওই কথা বেরিয়ে গিয়েছিল আমার মুখ থেকে। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা আমার অবস্থান ভাল মতোই জানেন। সঠিক ভাবে তা বোঝাতে না পারার জন্য দুঃখিত আমি।’ তবে খোসরোশাহি মানতে না চাইলেও, চাপের মুখেই তিনি অবস্থান পাল্টাতে বাধ্য হয়েছেন বলে মত নেটিজেনদের।
আরও পড়ুন: জল্পনার অবসান, মহারাষ্ট্রে জারি রাষ্ট্রপতি শাসন, বিজ্ঞপ্তিতে সই করলেন রামনাথ কোবিন্দ
রবিবার একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেই বিতর্ক বাধিয়ে বসেন খোসরোশাহি। জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘সৌদি সরকার তো ভুল স্বীকার করেছে! সব মানুষেরই ভুল হয়। তার অর্থ এই নয় যে, কোনওদিন তাদের ক্ষমা করা যাবে না।’’ এই মন্তব্য নিয়ে হইচই পড়ে যাওয়াতেই শেষমেশ ক্ষমা চেয়ে নিলেন খোশরোশাহি।
আরও পড়ুন: সময় ছিল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত, তার আগেই কী ভাবে রাষ্ট্রপতি শাসন? তোপ বিরোধীদের
সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক খাশোগি গত বছর ২ অক্টোবর তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে গিয়েছিলেন। সেখানে সৌদি সরকারের প্রতিনিধিরা খাশোগিকে খুন করে তাঁর হাত পা কেটে সব দেহাংশ সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। বিষয়টি চাউর হতেসৌদি প্রশাসন ১১ জনের বিরুদ্ধে এই খুনের দায় চাপিয়ে গোপনে বিচার চালালেও, কাউকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি। এই খুনে যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের কোনও ভূমিকা নেই বলে সৌদি সরকার শুরু থেকে দাবি করে এসেছে। যুবরাজের অলক্ষে তাঁর এক অনুচরই পরিকল্পিত ভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে দাবি তাদের। তবে তাতেও বিতর্ক থামেনি।