আশপাশেই কোথাও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে দুই অপরাধী। প্রতীকী ছবি।
গত কাল ভোর বেলার ঘটনা। ভোর ৫টা ৪০ নাগাদ প্রথম পুলিশের কাছে ফোন আসে— সেন্ট্রাল কানাডার সাসকাচুয়েন প্রদেশের জেমস স্মিথ ক্রি নেশনে এক ব্যক্তিকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়েছে। তার পরের কয়েক মিনিটে অসংখ্য ফোন। এই হামলায় ১০ জনকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়েছে। জেমস স্মিথ ক্রি নেশন এবং ওয়েলডন এলাকার ১৩টি জায়গায় হামলা চলেছে। জখম অন্তত ১৫ জন। তাঁদের অনেকেই গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। আতঙ্কের বিষয়, আততায়ীরা এখনও অধরা। সাসকাচুয়েন, ম্যানিটোবা ও অ্যালবার্টায় সতর্কবার্তা জারি করেছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, দুই অপরাধী সশস্ত্র অবস্থায় আশপাশেই কোথাও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ভয়ানক ঘটনা। দুঃখেরও।’’
দুই সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। প্রকাশ করা হয়েছে তাদের ছবি ও নাম। এরা হল, ড্যামিয়েন স্যানডারসন এবং মাইলস স্যানডারসন। পুলিশ জানিয়েছে, এই দু’জন একটি কালো নিসান রোগ গাড়ি নিয়ে ঘুরছে। গাড়ির লাইসেন্স প্লেট সাসকাচুয়েনের— ১১৯ এমপিআই। দুই আততায়ীর কাছেই অস্ত্র রয়েছে। অপরাধীদের ধরতে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের বিশাল বাহিনী অভিযানে নেমেছে। পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার রন্ডা ব্ল্যাকমোর একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘যত বেশি সম্ভব পুলিশ নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিষ্কার করে জানাচ্ছি, দুই আততায়ীর সন্ধান চলছে। সাসকাচুয়েন ও আশপাশের অঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে আমাদের অনুরোধ, সাবধানে থাকবেন। প্রাথমিক তদন্তে আমাদের সন্দেহ, নিহতদের কেউ কেউ আততায়ীদের নিশানাতেই বাকিদের হাতের সামনে পেয়ে মারা হয়েছে।’’
প্রেসিডেন্ট ট্রুডোও একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন— ‘‘এ রহস্যের সমাধান করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে। ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে অনুরোধ, সকলে সাবধানে থাকবেন। পুলিশ যা বলছে, মেনে চলবেন। কেন্দ্রীয় সরকার জেমস স্মিথ ক্রি নেশনের আঞ্চলিক নেতৃত্বের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলছে। সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। এই হামলার জন্য যারা দায়ী, তাদের অবশ্যই বিচার হবে।’’
পুলিশ ঘোষণা করেছে, দুই আততায়ীর মধ্যে ড্যামিয়েন স্যানডারসনের বয়স ৩১, উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি, ওজন ৭০ কেজি, কালো চুল, চোখের মণি বাদামি রঙের। মাইলস স্যানডারসনের বয়স ৩০ বছর। সে ৬ ফুট ১ ইঞ্চি লম্বা, ওজন ১০৮ কেজি, বাদামি চুল ও বাদামি রঙের চোখের মণি।
ব্ল্যাকমোর বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে এমন ভয়াবহ ঘটনা মনে পড়ে না।’’ মানুষকে সাহায্যের জন্য দু’টি আপৎকালীন কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তিনটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছে জেমস স্মিথ ক্রি নেশনে। সেই সঙ্গে পুলিশ তন্নতন্ন করে খুঁজছে দুষ্কৃতীদের। সংবাদমাধ্যমের কাছে ব্ল্যাকমোর বলেন, ‘‘আমি জানি না ড্যামিয়েন ও মাইলস আমার এই কথা শুনছে কি না। কিন্তু যদি শোনে, ওদের বলব অবিলম্বে আত্মসমর্পণ করতে।’’