কারিয়ে মিউজিয়ামের ছাদে সেই ফ্রেস্কো কাজ।
হাইয়া সোফিয়ার পরে কারিয়ে মিউজিয়াম। তুরস্কে একের পর এক গ্রিক অর্থোডক্স গির্জাকে মসজিদে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্তে অবিচল প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান। অতিমারির আবহে দেশের দেউলিয়া অর্থনীতি থেকে চোখ সরিয়ে কট্টরপন্থী ও জাতীয়তাবাদী মুসলিমদের সমর্থন আদায় করাই এখন তাঁর পাখির চোখ। তবে এই বিতর্কিত সিদ্ধান্তে গ্রিসের সঙ্গে তুরস্কের টানাপড়েনে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা।
এত দিন ধরে ধর্ম নির্বিশেষে তুরস্কের সব থেকে জনপ্রিয় পর্যটনস্থল ছিল দেড় হাজার বছরের পুরোনো হাইয়া সোফিয়া। ১০ জুলাই যাকে ‘গ্র্যান্ড মস্ক’-এর তকমা দিয়ে পাল্টে দিলেন এর্ডোয়ান। এখানেই থেমে থাকেননি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। দু’দিন আগে আর একটি অর্থোডক্স গির্জা তথা জাদুঘরকে মসজিদে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ‘চার্চ অব দ্য হোলি সেভিয়র অব কোরা (বা কারিয়ে)’ নামে পরিচিত গির্জাটি প্রায় এক হাজার বছর প্রাচীন। দেওয়াল ও ছাদজোড়া অপরূপ ফ্রেস্কো কাজের জন্য বিখ্যাত এই কারিয়েকে ১৯৪৫ সালে সংগ্রহশালায় রূপান্তরিত করে তৎকালীন তুরস্ক সরকার।
ঐতিহাসিক তাৎপর্যপূর্ণ এ রকম দু’টি সংগ্রহশালাকে শুধু একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের উপসনাস্থল করার সিদ্ধান্তে বিভিন্ন দেশ এবং ইউনেস্কোর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তুরস্ককে। সমালোচনায় সব থেকে বেশি সরব পড়শি গ্রিস। গত কয়েক মাস ধরে জলসীমা ও এজিয়ান সাগরে সামুদ্রিক গ্যাস ভান্ডার নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে গ্রিসের সম্পর্কের পারদ দফায় দফায় চড়েছে। জুলাইয়ে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয় যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়েছিল জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে। এ ভাবে মিউজিয়ামকে মসজিদে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্তকে ‘ন্যক্কারজনক’ আখ্যা দিয়ে বিবৃতিও প্রকাশ করেছে গ্রিসের বিদেশ মন্ত্রক।
কিন্তু এর্ডোয়ান যে নিজের পথে অনড়, তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাঁর একের পর এক বিতর্কিত পদক্ষেপে।