বিব্রত মার্কন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প? -ফাইল ছবি।
পুনর্নিবাচিত হওয়ার জন্য চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সাহায্য চেয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শি-কে ট্রাম্প বলেছিলেন, বেজিং আরও বেশি পরিমাণে মার্কিন কৃষি পণ্য কিনলে তাঁর দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসতে সুবিধা হয়। মার্কিন মুলুকে ভোটের বছরে এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন। তাঁর প্রকাশিতব্য বই দ্য রুম ‘হোয়ার ইট হ্যাপেন্ড’-এ। মার্কিন দৈনিক দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এই খবর দিয়েছে।
বল্টনই ট্রাম্প জমানার হোয়াইট হাউসে প্রবীণতম কোনও সরকারি কর্তা, যিনি তাঁর বইয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করলেন, নির্দ্বিধায়। ফলে, শোরগোল শুরু হয়েছে। সরকারি তথ্যাদি গোপন রাখার মন্ত্রগুপ্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে বল্টনের বই প্রকাশ আটকে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। বইটি বেরনোর কথা আগামী সপ্তাহে।
মার্কিন দৈনিকটির খবর, ওই বইয়ে বল্টন লিখেছেন, গত বছর ওসাকায় জি-২০ জোটের দেশগুলির বৈঠকের ফাঁকে আলাদা ভাবে চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মুখোমুখি বসেছিলেন ট্রাম্প। সেই সময়েই ট্রাম্প বার বার শি-কে বলেন, তাঁকে ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য চিন সাহায্য করুক। আরও বেশি করে মার্কিন কৃষি-পণ্য কিনুক।
বল্টন লিখেছেন, “সে দিন বোঝা যায়নি জাতীয় স্বার্থ নাকি নিজের স্বার্থ, কোনটা ট্রাম্পের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। হোয়াইট হাউসে থাকার সময় আমি ট্রাম্পকে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে দেখিনি যাতে তাঁর ক্ষমতায় ফিরে আসার পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটে।’’
আরও পড়ুন- হোঁচট খেলে হাত টেনে ধরার লোক পায়নি সুশান্ত, লিখলেন সুজিত সরকার
আরও পড়ুন- ‘আমি যদি তোমার ভেঙে যাওয়া মনটাকে জোড়া দিতে পারতাম... ’
খবর, বইটির প্রকাশ বন্ধ করার জন্য যাতে নির্দেশ দেওয়া হয়, সে জন্য বুধবার ওয়াশিংটনের ফেডারেল জজের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু বইটির একটি কপি হাতে এসে যাওয়ায় ট্রাম্প সম্পর্কে বল্টনের বিস্ফোরক অভিযোগ নিয়ে খবর বেরিয়েছে আরও দুটি মার্কিন দৈনিক ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ এবং ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এ।
বুধবার রাতেই ফক্স নিউজ টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, “সোজা কথায়, বল্টন আইন ভেঙেছেন। যত রকম ভাবে আইন ভাঙা যায়। ওঁকে যখন প্রশাসনে এনেছিলাম তখন কেউই তো ওঁকে চিনতেন না।’’
তবে বল্টনের অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার না করে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কেলি ম্যাকানি বলছেন, “সরকারি যে সব তথ্য গোপন রাখা উচিত, বইটি সেই সব তথ্যেই ভরা।’’
বল্টন তাঁর বইয়ে লিখেছেন, “ট্রাম্পের প্রশাসন কোনও নীতি বা মতাদর্শে চলে না। চলে না কোনও মহৎ কৌশলেও। সেটা চলে শুধুই ট্রাম্পের মর্জিমাফিক।’’
বুধবার অবশ্য সেনেটে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে মার্কিন প্রশাসনের বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইথাইজার বল্টনের অভিযোগকে ‘একেবারেই অসত্য’ বলেছেন।