প্রার্থনা: আমেরিকার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। উইলমিংটনে। রয়টার্স
বিদায় নিতেই হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। জো বাইডেনকে জয়ের শংসাপত্র দিয়ে দিল আমেরিকান কংগ্রেসের দুই কক্ষ। আর তার পরেই বিবৃতি দিয়ে কার্যত হার স্বীকার করে নিলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। সেই বিবৃতিতে যদিও ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘ভোটের ফলাফল আমি একেবারেই মানছি না। তথ্যই আমার হয়ে প্রমাণ দেবে। তবে ২০ জানুয়ারি সুশৃঙ্খল ভাবেই ক্ষমতা হস্তান্তর হবে।’’
অথচ এক দিন আগেই উল্টো কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। গত কাল ওয়াশিংটনে তাঁর যে জনসভার পরে আমেরিকার পার্লামেন্টে হামলা হল, সেখানে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘কখনওই হার মানব না।’’ আজকের বিবৃতিতে তাঁর বক্তব্য, ‘‘শুধু বৈধ ভোটকে মান্যতা দেওয়ার লক্ষ্যে আমাদের লড়াই চলবে— এ কথা বারবার বলে এসেছি। প্রেসিডেন্ট সংক্রান্ত ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রথম দফা এ বার শেষ হল। আমেরিকাকে আবার মহান করে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের লড়াইও সবে শুরু হল।’’
২০ জানুয়ারি আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন বাইডেন। ইলেক্টোরাল কলেজে তাঁর এবং কমলা হ্যারিসের জুটির পাওয়া সমস্ত ভোটকেই মান্যতা দিয়েছে আমেরিকান সেনেট এবং হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভস। ৩০৬টি ইলেক্টোরাল ভোট পেয়েছিলেন বাইডেন। ট্রাম্প পেয়েছিলেন ২৩২টি। অধিবেশনে পেনসিলভেনিয়া এবং অ্যারিজ়োনার ভোটের ফলাফল নিয়ে আপত্তি তোলেন রিপাবলিকানরা। আপত্তি ওঠে নেভাডা এবং মিশিগান নিয়েও। কিন্তু সমস্ত আপত্তিই খারিজ হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি পাক আদালতের
বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে গত কাল পর্যন্ত ‘নিজস্ব ক্ষমতায়’ ইলেক্টোরাল ভোট খারিজ করার কথা বলে চাপ দিয়ে গিয়েছেন ট্রাম্প। পেন্স যদিও গোড়াতেই জানিয়ে দেন, সেই ক্ষমতা তাঁর নেই। ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার জেরে বেশ কয়েক ঘণ্টা থমকে থাকার পরে রাতে ফের কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন বসে। পেন্স তাতে নেতৃত্বও দেন। কংগ্রেস সদস্যেরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা সেনেট কক্ষে ঢুকে পড়ার আগেই ইলেক্টোরাল ব্যালট নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলতে পেরেছিলেন কর্মীরা। সমস্ত ভোট প্রত্যয়িত হওয়ার পরে পেন্স বলেন, ‘‘নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের কার্যকাল শুরু হচ্ছে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি। সেনেটের প্রধানের প্রকাশ করা নির্বাচনের এই ফলকেই তার ঘোষণাপত্র হিসেবে ধরে নিতে হবে।’’
পরবর্তী অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে আজই বিচারপতি মেরিক গারল্যান্ডকে মনোনীত করেছেন বাইডেন। অ্যাসোসিয়েট অ্যাটর্নি জেনারেল বেছেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বনিতা গুপ্তাকে। শপথে দুই প্রাক্তন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন এবং বারাক ওবামার উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা যেমন রয়েছে, তেমনই একমাত্র জীবিত প্রাক্তন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট হিসেবে জর্জ ডব্লিউ বুশ থাকবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। ট্রাম্প কী করেন, সেটাই দেখার। তবে রাজনীতিতে তিনি যে এখনই ইতি টানছেন না, এমন ইঙ্গিত দিয়ে রেখে দিয়েছেন তিনি।