বিশ্ব জুড়েই এখন তীব্র জলসঙ্কট। পৃথিবীর উপরিভাগের ৭০ শতাংশ জল হলেও পানীয় জলের পরিমাণ মাত্র ৩ শতাংশ। বেহিসাবি পানীয় জলের অপব্যবহার এবং বিশ্ব উষ্ণায়ণের জেরে পানীয় জলের পরিমাণ ক্রমশ কমছে।
তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খরা পরিস্থিতি। রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য বলছে, পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছচ্ছে যে, ২০৩০ সালের মধ্যে পানীয় জলের চাহিদা বেড়ে যাবে প্রায় ৪০ শতাংশ।
বেঙ্গালুরু, সাও পাওলো, বেজিং, কায়রো, জাকার্তা, মস্কো, ইস্তানবুল, মেক্সিকো সিটি, লন্ডন, টোকিও এবং মিয়ামি— জলশূন্য হওয়ার দৌড়ে এই শহরগুলোই সবচেয়ে এগিয়ে, বলছে রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য।
এর ফলে শুধু মানুষই নয়, জীবজগতেরও ব্যাপক ক্ষতি হবে। প্রচুর উদ্ভিদ এবং প্রাণী জলের অভাবে মারা যাবে। ফলে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলবে বিশ্ব। ক্রমশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে পৃথিবী।
ধ্বংসের প্রক্রিয়া যে ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে, চলতি বছরে এ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের দিকে তাকালেও তার প্রমাণ মিলছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা, চেন্নাইয়ের মতো শহরে ক্রমশ তীব্র হচ্ছে জলকষ্ট।
এ রকম পরিস্থিতিতে জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষার উদ্দেশে অভিনব পদক্ষেপ করল সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। পাখিদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা করল তারা।
এই মরু-রাজ্যে জলের উৎস মূলত দুটো। সামুদ্রিক জল এবং ভূগর্ভস্থ জল। কিন্তু ভূগর্ভস্থ জলের লবনের পরিমাণ সামুদ্রিক জলের থেকেও অনেক বেশি এখানে। ফলে মূলত সামুদ্রিক জলকে পরিস্রুত করে পানীয় জল হিসাবে ব্যবহার করা হয়। যা খুবই ব্যয়বহুল।f
মানুষ খরচ করে জল কিনে খান। কিন্তু পাখিরা? তাদের তো অর্থ নেই। ফলে জল পান করা পাখিদের ক্ষেত্রে খুবই সমস্যার হয়ে দাঁড়িয়েছে এখানে। অথচ প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করতে পাখিরা অপরিহার্য। এই সমস্যা দূর করতে অভিনব উদ্যোগ নিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহি।
শারজা জেলা এবং দিব্বা অল হিসন মিউনিসিপ্যালিটির সহযোগিতায় পাখিদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শারজা জেলা এবং গ্রাম বিষয়ক দফতরের সহযোগিতায় ৪০০টি পাত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেগুলোতে পাখিদের জন্য পানীয় জল রাখা হবে।
শহরের বিভিন্ন জায়গায় এই জলভর্তি পাত্র রাখা থাকবে। পাখিরা প্রয়োজনে যখন তখন সেই জল খেতে পারবে।
পাত্রগুলোর উপর নজরদারিও রাখার দায়িত্ব দিব্বা অল হিসন মিউনিসিপ্যালিটির। পাত্র ফুটো বা ভেঙে যাচ্ছে কি না, বা পাত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল রয়েছে কি না তা দেখার দায়িত্ব ওই মিউনিসিপ্যালিটির।
ওই মিউনিসিপ্যালিটি সূত্রে খবর, এর জন্য প্লাস্টিকের পাত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্লাস্টিকের পাত্রগুলোর আকার এমনই রাখা হয়েছে, যাতে জল খেতে পাখিদের কোনও অসুবিধা না হয়।