বৃহস্পতিবারের জি২০ বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও যুদ্ধের আঁচ পড়তে পারে। ফাইল ছবি।
বেঙ্গালুরুতে সদস্যসমাপ্ত জি২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির অর্থমন্ত্রীদের মহাবৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের ছায়া। মতান্তরের জেরে যৌথ বিবৃতি প্রকাশই হয়নি। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, বৃহস্পতিবারের জি২০ বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও যুদ্ধের আঁচ পড়তে পারে। আমেরিকা এবং ইউরোপের বেশ কিছু দেশের সঙ্গে রাশিয়া ও চিনের সংঘাত ক্রমশ বহুপাক্ষিক মঞ্চে প্রকট হচ্ছে।
আয়োজক ভারতকে কিছুটা অবাক করে আসন্ন বৈঠকে অনুপস্থিত থাকছেন জাপানের বিদেশমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়শি। তাঁর দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের বাজেট অধিবেশনে থাকার কারণেই তাঁর এই গরহাজিরা। ঘটনা হল, জি২০ পর্যায়ের বৈঠকের পাশাপাশি, চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াড-এর (ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া) বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকও নির্ধারিত রয়েছে দিল্লিতে। কোয়াড-এর অন্যতম অংশীদার জাপানের বিদেশমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে ওই বৈঠকের গুরুত্ব অনেকটাই লঘু হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। পরিবর্তে জাপান থেকে কে ভারতে আসবেন তা স্থির হয়নি। কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের মত, বর্তমান আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বেহাল দশায় কোনও সংঘাতের বাতাবরণে জড়াতে চায় না জাপান।
তবে সব মিলিয়ে জি২০ বিদেশমন্ত্রী বৈঠকের আগে যে নানা রকম কথাবার্তা উঠেছে, তাতে আন্তর্জাতিক স্তরে ভুল বার্তা যাচ্ছে বলে নড়ে বসেছে আয়োজক এবং অংশীদার ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের সূত্রে বলা হয়েছে, “আমরা লক্ষ্য করছি জি২০ অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলনের নির্যাস এবং আলোচনা থেকে উঠে আসা নথি সম্পর্কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু মন্তব্য করা হচ্ছে। ঘটনা হল, এই সারসংক্ষেপ ভারতের সব দিক বিবেচনা করে ভারসাম্যমূলক অবস্থানেরই প্রতিফলন ঘটিয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে বালি ঘোষণাপত্রের প্রতিফলন ঘটানো। ফলে এই নিয়ে কোনও সমালোচনা তথ্যগত ভাবে ঠিক নয়।”
বৃহস্পতিবারের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দেবেন আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি। তবে কূটনৈতিক শিবির নজর রাখছে চিনের নতুন বিদেশমন্ত্রী কুন গ্যাংয়ের নয়াদিল্লি সফর নিয়ে। বিদেশমন্ত্রী হিসেবে এটি তাঁর প্রথম ভারত সফর হতে চলেছে। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জি২০ আন্তর্জাতিক সমন্বয়ের একটি মূল মঞ্চ। তাই আন্তর্জাতিক অর্থনীতির সামনে তৈরি হওয়া বিপদ এবং উন্নয়নের মোকাবিলায় জি২০ আরও গুরুত্ব দিক, এটা জরুরি। খাদ্য, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে সমন্বয়ের প্রশ্নে জি২০ যাতে বহুপাক্ষিক মঞ্চ থেকে ইতিবাচক বার্তা দিতে পারে, সে জন্য চিন সব রাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত’।