new Coronavirus strain

ডেল্টা স্ট্রেনের দাপটে তৃতীয় ঢেউ ব্রিটেনে

কিছু দিন আগেই বিশেষজ্ঞেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, ব্রিটেনে ডেল্টা স্ট্রেনে সংক্রমণ প্রতি ১১ দিন অন্তর দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২১ ০৫:১২
Share:

ছবি - রয়টার্স

ব্রিটেনে আছড়ে পড়ল কোভিড-১৯-এর তৃতীয় ঢেউ। গত কাল এক দিনে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১১ হাজার বাসিন্দা। চার মাসে এই প্রথম দশ হাজারের গণ্ডি ছাড়াল। বেশির ভাগই ডেল্টা স্ট্রেনে আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞদের দাবি, তৃতীয় ঢেউ চলে এসেছে।

Advertisement

কিছু দিন আগেই বিশেষজ্ঞেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, ব্রিটেনে ডেল্টা স্ট্রেনে সংক্রমণ প্রতি ১১ দিন অন্তর দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। আগামী কাল, ২১ জুন লকডাউন সম্পূর্ণ ভাবে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। পরিস্থিতির আঁচ পেয়ে তা আগেই বাতিল করে দিয়েছে সরকার। এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘স্বাধীনতার রোডম্যাপ’। আজ ‘জয়েন্ট কমিটি অন ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন’-এর উপদেষ্টা অ্যাডাম ফিন বলেন, ‘‘কঠিন পরিস্থিতি। অতিসংক্রামক ডেল্টা স্ট্রেনের বিরুদ্ধে এ বার ভ্যাকসিনের লড়াইয়ের সাক্ষ্য হবে ব্রিটেন।’’ তৃতীয় ঢেউ সম্পর্কে ফিনের বক্তব্য, ‘‘দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যাটা আরও বাড়বে। একটাই আশা, আগের থেকে হয়তো সংক্রমণের গতি কিছুটা কম থাকবে।’’

ও দিকে, করোনায় মৃতের সংখ্যা ৫ লক্ষের গণ্ডি ছাড়াল ব্রাজিলে। বিশ্বে মৃতের সংখ্যার নিরিখে আমেরিকার পরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তারা। আমেরিকায় মৃতের সংখ্যা ৬ লক্ষ ১৭ হাজার। তবে গত কয়েক মাসে মৃত্যু কমেছে। তৃতীয় স্থানে ভারত। সে দেশে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ লক্ষ ৮৬ হাজারের কিছু বেশি সংখ্যক বাসিন্দা।

Advertisement

লক্ষ লক্ষ মৃত্যুর জন্য সরকারকেই দায়ী করছে ব্রাজিলবাসীর একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, অতিমারি সামলাতে প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো শুধু ব্যর্থই নন, তাঁর অকর্মণ্যতার জন্যই দেশের এই পরিস্থিতি। সপ্তাহান্তে আজ সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দিতে রিয়ো ডি জ্যানেইরো-সহ বহু শহরের রাস্তায় নামেন হাজার হাজার মানুষ।

রাজধানী রিয়োর রাস্তায় স্লোগান ওঠে, ‘‘বোলসোনারো নিপাত যাক। এই সরকার মানুষকে খেতে দিতে পারে না। চাকরি দেয় না।’’ বিক্ষোভে যোগদানকারী ২০ বছর বয়সি ইজ়াবেলা গুলজোর বলেন, ‘‘ব্রাজিলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। কোভিড টিকাকরণের হাল খুবই খারাপ। এ দিকে দেশে এত বড়-বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে!’’ দেশের ২৬টি প্রদেশের মধ্যে ২২টিতেই এ দিন প্রতিবাদ মিছিল বেরোয়। বহু ক্ষেত্রে মিছিলের নেতৃত্বে ছিল বিরোধী বামপন্থী দল। সামনের বছর ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বোলসোনারোকে যে যারপরনাই বেগ পেতে হবে, তা এক রকম স্পষ্ট।

রিয়োর মিছিলে স্লোগানও শোনা যায়, ‘‘প্রেসিডেন্ট গণহত্যাকারী।’’ কারও কারও টি-শার্ট ও মাস্কে ছিল প্রাক্তন বামপন্থী শাসকের ছবি।

সাও পাওলোতে কোভিডে মৃতদের স্মরণে বিক্ষোভকারীরা লাল বেলুন ওড়ান। সমালোচকদের বক্তব্য, বোলসোনারো কোনও দিন কোভিডকে গুরুত্ব দেননি। টিকাকরণেও জোর দিচ্ছেন না। বরাবর লকডাউন বিরোধী ছিলেন। নিজের কোভিড হওয়ার খবরই সাংবাদিক বৈঠক করে দিতে এসেছিলেন, তা-ও মাস্ক ছাড়া। সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকা সাংবাদিকদের সংস্থাগুলি সে সময়ে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা করেন। লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু দেখেও কোভিডকে ‘সামান্য জ্বর’ বলেছেন। লকডাউনের বিরোধিতা করে বলেছেন, তাতে অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশের বক্তব্য, প্রেসিডেন্টের এই বেপরোয়া সিদ্ধান্তের জন্যেই ৫ লক্ষ মানুষের প্রাণ গিয়েছে।

২১ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষের দেশ ব্রাজিল। এ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ বাসিন্দার টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে বলে দাবি দেশের স্বাস্থ্য সংস্থার। অন্য একটি অংশের দাবি, আরও কম। ১২ শতাংশও না। টিকাকরণের এই মন্থর গতি নিয়েও সরব বিক্ষোভকারীরা।

বোলসোনারোর সমর্থকেরা দেশজোড়া মিছিলের পিছনের বিরোধীদের ‘ছক’ দেখতে পাচ্ছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘সামনের বছর নির্বাচন। তার আগে বোলসানারো-বিরোধী হাওয়া গরম করতেই এই ধরনের মিছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement