১৪ বার ইউক্রেনের দিকে গোলা ছুড়েছে রুশেরা। ছবি: রয়টার্স।
শুক্রবার দুপুর থেকে ৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি শুরু করার কথা জানিয়েছিল রাশিয়া। এক তরফা ভাবেই। মস্কো থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছিলেন, অর্থোডক্স ক্রিসমাসের সম্মানে এই বিরতি ঘোষণা। যদিও ইউক্রেন প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে যে এটা আদতে ক্রেমলিনের নয়া রণকৌশল। অস্ত্র মজুত করে নেওয়ার ফিকির। ফলে তারা এই বিরতির আশ্বাসে তারা ভরসা রাখেনি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কথা ধার করে বলা ভাল, রুশ সেনার তরফেই আদতে তা রাখতে দেওয়া হয়নি। ফলে ‘যুদ্ধবিরতির’ মাঝেও স্বমহিমায় চলল যুদ্ধ।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অবশ্য মন্তব্য, আমরা মস্কোর সময় অনুযায়ী বেলা ৯টা থেকেই যুদ্ধবিরতি পালন করা শুরু করেছিলাম। কিন্তু ইউক্রেনের দিক থেকে লাগাতার শেলিং চালানো হয়েছে সেনা ছাউনি এবং অন্যান্য জায়গায়। ফলে আমরা চেয়েও চুপ করে থাকতে পারিনি।
এ দিকে সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, রাশিয়া যতই মুখে যুদ্ধবিরতির কথা বলুক না কেন, রুশ রকেটের আওয়াজ সেই সুর ছাপিয়ে গিয়েছে। আর ইউক্রেনের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘গতকাল যা পরিস্থিতি ছিল, গত সপ্তাহে যা ছিল, গোটা মাস জুড়ে যা ছিল, আজও তাই। আশ্বাস থাকলেও পরিবর্তন কিছু নেই।’’ সঙ্গে আক্ষেপের সুরে তিনি বলে চলেন, ‘‘ওদের (রুশ) সঙ্গে কথা বলে কোনও লাভ নেই, ওদের প্রতিশ্রুতি, নির্দেশ, ফরমানে বিশ্বাস করে কোনও লাভ নেই।’’
যুদ্ধবিরতির প্রথম তিন ঘণ্টাতেও চুপ ছিল না রুশ সেনা। এমনটাই দাবি লুহানস্ক প্রদেশের গভর্নর সেরহি হাইদাইয়ের। তিনি বলেন, ওইটুকু সময়ের মধ্যেই কমপক্ষে ১৪ বার ইউক্রেনের দিকে গোলা ছুড়েছে রুশেরা। গত কাল একটি বসতিতেও পর পর তিন বার হানা দেয় তারা। সমাজমাধ্যমে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়ে হাইদাই লেখেন, ‘‘অর্থোডক্স খুনি, আপনাদের ক্রিসমাসের শুভেচ্ছা জানাই।’’
পুতিনের বিরতি-বার্তায় প্রথম থেকেই আস্থা না-রাখার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। একই অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছিল আমেরিকান প্রশাসনও। তাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে তরফে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মনে রাখতে হবে, যুদ্ধবিরতির কথা সেই একই ব্যক্তি বলেছেন যিনি এক সময়ে এ-ও বলেছিলেন যে তিনি ইউক্রেনকে আক্রমণ করবেন না।’’