শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের মৌলবাদী রাজনৈতিক দল জামাত-ই-ইসলামি এবং তাদের জঙ্গি মনোভাবাপন্ন শাখা সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে এবং যে কোনও সময়ে সেই ঘোষণা করা হবে বলে আজ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মঙ্গলবার বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, সরকার নির্দেশ জারি করে এই দুই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করবে। সব ঠিক থাকলে বুধবারই নির্দেশ জারি হয়ে যাবে। বেশি রাত পর্যন্ত তা হয়নি।
কার্ফু শিথিলের মেয়াদ বাড়ানো এবং সান্ধ্য আইনের ঘোষণা করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল এ দিন সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন। জামাতকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, “যে কোনও সময়ে ঘোষণা করা হতে পারে।” রবিবার থেকে প্রাথমিক স্কুল খোলার ঘোষণা করেছে সরকার। তবে ১২টি সিটি কর্পোরেশন এবং নরসিংদী পুরসভা এলাকার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ক্লাস শুরু হবে আরও এক সপ্তাহ পরে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের জোর করে তুলে এনে আন্দোলন তুলে নেওয়ার ঘোষণা করানো বাংলাদেশের গোয়েন্দাপ্রধান হারুন অর রশিদকে সরিয়ে দিয়েছে সরকার। হাই কোর্টের বিচারপতিও সোমবার হারুনকে তিরস্কার করেন। নতুন গোয়েন্দাপ্রধান হলেন মহাম্মদ আশরাফুজ্জামান।
তাদের দীর্ঘ দিনের শরিক জামাত-ই-ইসলামিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা খফরুল ইসলাম আলমগির বলেছেন, “হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে সরকার-বিরোধী আন্দোলনকে দমন করার পরে নজর ঘোরাতেই সরকার জামাত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে। এতে মানুষের ক্ষোভ কমবে না।” জাতীয় পার্টি (জি এম কাদেরপন্থী)-ও বলেছে, “জামাত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করলে যেমন তারা দেশ থেকে উবে যাবে না, তাদের বিপদও কাটবে না।”
জামাতের আমির শফিকুর রহমান সরকারের এই প্রয়াসের নিন্দা করে বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘জামাত-ই-ইসলামি প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন, যা বাংলাদেশের সব গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে। আওয়ামী লীগ জামাতের সঙ্গে অতীতে অনেক আন্দোলন করেছে।’
আজ বিভিন্ন সংগঠনের ছাত্র নেতাদের ডেকেছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়ায়দুল কাদের। অনেকের দাবি, কাদেরই ছাত্র লীগকে কোটা-বিরোধী আন্দোলনকারীদের উপরে চড়াও হওয়ার নির্দেশ দেন। ছাত্রনেতারা কাদেরের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকলে তিনি মঞ্চ থেকে নেমে গাড়িতে উঠে চলে যান।