দেশকে করোনাত্রাসের মধ্যে ফেলে কুড়িজন রক্ষিতাকে নিয়ে নিভৃতবাসে গিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রে তাইল্যান্ডের রাজা মহা বাজিরালংকর্ণ। তিনি জার্মানিতে আল্পসের কোলে বিসালবহুল হোটেল ‘দ্য গ্রেট হোটেল সোনেনবিখল’-এ আছেন সেল্ফ কোয়রান্টিনে।
অন্য পর্যটকদের জন্য হোটেলের দরজা বন্ধ। শুধু নিয়ম ভাঙা হয়েছে তাই-রাজের জন্য। তাঁর জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে এই হোটেল। কিন্তু এর পাশাপাশি আরও বৈশিষ্ট্য আছে এই প্রাচীন হোটেলের। আসুন, দেখে নিই এই হোটেল নিয়ে কিছু আকর্ষণীয় তথ্য।
মিউনিখ থেকে গাড়িতে এক ঘণ্টার দূরত্ব গারমিশ পার্টেনকিরচেন অঞ্চলে বাভারিয়ান আল্পসে অবস্থিত এই হোটেলটি। এর কাছে স্টার্নবার্গ হ্রদের উপরে রাজা মহা বাজিরালংকর্ণের একটি বাড়িও আছে।
জার্মান সংবাদপত্রে প্রকাশিত, স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি পাওয়ার পরেই হোটেলের দরজা খুলে দেওয়া হয় তাইল্যান্ডের রাজা ও তাঁর সঙ্গিনীদের জন্য।
গারমিশ পার্টেনকিরচেন স্কি-প্রিয়দের পছন্দের গন্তব্য। আল্পস পর্বতের অপূর্ব রূপের জন্য এই জায়গা অভিযাত্রীদেরও পছন্দের তালিকার শীর্ষে।
বাভারিয়ান আল্পস অঞ্চলে হোটেল সোনেনবিখল তৈরি হয়েছিল ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এই ভবনকে হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করত নাৎসি বাহিনীরা।
১৯৬০ সালে আবার হোটেল হিসেবে দেখা যায় এই প্রাসাদোপম বাড়িকে।
১৩০ বছরের প্রাচীন এই হোটেল থেকে জার্মানির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জুগসপিটজে-এর রূপ অপূর্ব।
পর্যটকরা আল্পসের মনোরম রূপ উপভোগ করতে পারেন হোটেলের সুইমিং পুল থেকেও। পাশাপাশি এই হোটেলে আছে সনাবাথ এবং ফিটেনস স্টুডিয়ো-ও।
হোটেলের অন্দরসজ্জার মূল থিম হল ময়ূর। লবি-সব বিভিন্ন জায়গায় আছে ময়ূরের মূর্তি।
বাভারিয়া প্রদেশের উনিশ শতকের প্রখ্যাত শাসক রাজা দ্বিতীয় লুডউইগের নামে এই হোটেলে দু’টি রাজকীয় স্যুইট আছে। বিশ্বের সেরা খাবার ও সুরা বছরভর পাওয়া যায় এই হোটেলে। তাদের সাপ্তাহিক বুফে পরিচিত ‘দ্য রেড সালোঁ’ নামে। সপ্তাহান্তে পরিবেশিত হয় ‘শ্যাম্পেন ব্রেকফাস্ট’। তবে বিশ্ব জুড়ে এই জরুরি অবস্থার মধ্যে রাজকীয় নিভৃতবাসে কোন কোন খাবার পরিবেশিত হচ্ছে, তা অবশ্য প্রকাশ্যে আসেনি।
সাধারণত অন্যান্য বছর বসন্ত ঋতুতে নানা দেশের পর্যটকের ভিড়ে হোটেল সোনেনবিখল গমগম করে। কিন্তু এ বার করোনা ভাইরাসের ত্রস্ত পরিবেশে সম্পূর্ণ বিপরীত ছবি এই রাজকীয় অতিথিনিবাসে। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)