চিনের প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং। ছবি: রয়টার্স।
নতুন করে ঠান্ডা যুদ্ধ যদি কাম্য না হয়, তা হলে বড় শক্তিগুলিকে নিজেদের মতপার্থক্যকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে বলে বার্তা দিলেন চিনের প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিকে নিয়ে গঠিত আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলন শুরু হল বুধবার। এ বারে আসিয়ানের পক্ষ থেকে আলাদা করে চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা ও কানাডার সঙ্গেও শীর্ষ সম্মেলন হচ্ছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আমেরিকার প্রতিনিধিত্ব করছেন। লি-র বার্তা মূলত আমেরিকার উদ্দেশে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আজ থেকে আসিয়ানের সম্মেলন শুরু হল। সেখানেই লি বলেন, ‘‘ভ্রান্ত ধারণা, পরস্পরবিরোধী স্বার্থ এবং বহিরাগত হস্তক্ষেপের কারণে বিভিন্ন দেশের মধ্যে মতান্তর এবং বিতর্ক জন্ম নিতেই পারে। সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে ইচ্ছেমতো অবস্থান বেছে নেওয়া, ব্লকের সঙ্গে ব্লকের সংঘাত ইত্যাদির বিরোধিতা করতে হবে এবং নতুন ঠান্ডা যুদ্ধকেও রুখতে হবে।’’ মনে রাখা যেতে পারে, জুন মাসে চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু-ও অনেকটা এই সুরেই কথা বলেছিলেন। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ন্যাটোর আদলে কোনও মঞ্চ গড়া হলে তার বিরুদ্ধে আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন।
আসলে দক্ষিণ চিন সাগরের আধিপত্য নিয়ে খটাখটির আবহে এশিয়ার দেশগুলিতে আমেরিকার উপস্থিতির বাড়বৃদ্ধি নিয়ে চিন বেশ কিছু দিন ধরেই উদ্বিগ্ন। আমেরিকা ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা অংশীদারির সদস্য। অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপানের সঙ্গে কোয়াড-এরও সদস্য। কমলা হ্যারিস ইতিমধ্যেই ওয়াশিংটনে ইউএস-আসিয়ান সেন্টার তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতেই চিনের প্রধানমন্ত্রী প্রচ্ছন্ন ভাবে আমেরিকাকে বার্তা দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, পরিস্থিতির রাশ না টানলে ফের এক ঠান্ডা যুদ্ধের জমি তৈরি হতে পারে।