—প্রতীকী চিত্র।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রথম বার ‘মেডিক্যাল ট্যুরিজ়ম কনক্লেভ’ বা চিকিৎসা পর্যটন সংক্রান্ত সম্মেলন হল রবিবার ঢাকা ক্লাবে। আয়োজক— বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশন, গৌহাটি, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ এবং সম্প্রীতি বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের প্রাক্তন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষ চিকিৎসার জন্য এত বেশি হারে ভারতে যান যে, বছরে দেশের ৫-৬ শো কোটি ডলার চিকিৎসা খাতেই ভারতে চলে যায়। সেই সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পশ্চিমের দেশ ধরলে এই টাকার পরিমাণ প্রায় ১ হাজার কোটি ডলার। তাই দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নত করার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে সুসংহত চিকিৎসা আদানপ্রদান পরিকাঠামো গড়ে তোলাও প্রয়োজন। তাতে দেশের মুল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।’’
প্রধান অতিথি সাহিত্যিক রীতা চৌধুরী বলেন, হনুমানের বিশল্যকরণী নিয়ে আসা থেকে শুরু করে বাঙালির পশ্চিমে হাওয়া বদলাতে যাওয়া পর্যন্ত, সব কিছুর মধ্যেই কিন্তু মেডিক্যাল ট্যুরিজ়মের বীজ লুকিয়ে আছে। তাকেই আধুনিক পরিকাঠামোয় ঢেলে সাজিয়ে নিলে রথ দেখা, কলা বেচা দুই-ই সম্ভব।
দুই পারের চিকিৎসকদের মতে, সীমান্ত পার করে ভারতে যাওয়া রোগী ও আত্মীয়রা বিভিন্ন অসুবিধায় পড়েন। উত্তর-পূর্বের মানুষও নেপাল ও পটনায় যান। কিন্তু কোথায় সত্যিই চিকিৎসা ভাল হয়, জানাটা খুব দরকার। এমনকি অসমের ধুবুড়ির লোক ঢাকায় এসে চিকিৎসা করাতে গেলে, কোথায় যাবেন, বুঝতে পারেন না। দক্ষিণ ভারতে যাওয়া বাংলাদেশের রোগীরা ভাষাগত সমস্যাতেও পড়েন। দু’দেশের প্রতিনিধিরাই মনে করেন, বাংলাদেশ ও ভারতে সমান ভাবে কাজ করবে, এমন স্বাস্থ্য বিমা প্রচলন করা প্রয়োজন। ভিসার নিয়ম শিথিল ও মানবিক করার আবেদনও রাখা হয়।
পশ্চিমবঙ্গ, অসম, বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি হাসপাতালের শতাধিক বিশেষজ্ঞ এবং ওষুধ শিল্পের প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দেন। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোগত বৈষম্য কমিয়ে আনা, পারস্পরিক সহযোগিতা ও অংশিদারিত্ব বাড়ানোর উপরে জোর দেন তাঁরা।
বিশেষ অতিথি মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত মেজর শামসুল আরেফিন একাত্তরের দিনগুলির কথা স্মরণ করে বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের সার্বিক কল্যাণে স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতার উপরে জোর দেন।