—প্রতীকী চিত্র।
নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য বুধবার সেনাবাহিনীকে নামাল বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। রবিবারের নির্বাচন বানচাল করার ডাক দিয়েছে শক্তির দিক দিয়ে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং কট্টরপন্থী ইসলামি দল জামাতে ইসলামি।
এর আগে ২০১৪-য় বিএনপি-জামাত একই ঘোষণা করার পরে প্রায় দেড়শো স্কুল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আগুনে পোড়ানো হয়েছিল কয়েক হাজার যানবাহন। ১০ বছর পরে যাতে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য এ বার নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি বাড়তি তৎপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা বিভাগগুলিও। সেনা ছাড়া অন্য বাহিনীগুলির সদস্য়দের ইতিমধ্যেই ধাপে ধাপে বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র নিয়োগ করা হয়েছে। পুলিশ তো রয়েছেই। বুধবার রাজধানী ঢাকার নানা জায়গায় সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে জংলা পোশাক পরা সশস্ত্র সেনাদের টহল দিতে দেখা গিয়েছে। খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী থেকে চট্টগ্রাম— সর্বত্রই মানুষ কৌতূহল ভরে রাস্তায় নামা সেনাদের দেখেছে।
ইগল প্রতীক নিয়ে দাঁড়ানো স্বতন্ত্র প্রার্থী অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ায় নওগাঁ-২ আসনের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। এর ফলে রবিবার ভোট হবে বাংলাদেশের ২৯৯টি আসনে। সংবিধান অনুসারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং তাঁর স্ত্রীকে ভোট দিতে হয় পোস্টাল ব্যালটে। এ দিন পাবনা সদর আসনের ভোটার রাষ্ট্রপতি মোহম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং তাঁর স্ত্রী রেবেকা সুলতানা সে ভাবেই নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করলেন। তার পরে তাঁরা দেশবাসীর উদ্দেশে নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানান। আশাপ্রকাশ করেন, “সকলের অংশগ্রহণে এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।”
বাংলাদেশের সাংবাদিকদের কয়েকটি প্রতিনিধি দল এ দিন গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। গুজব ও ভিত্তিহীন সংবাদের বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের জন্য হাসিনা সাংবাদিকদের পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের রায় আটকাতে একটি শক্তি সচেষ্ট। তারা ভোটের মাঠে নামছে না, নিশ্চিত পরাজয় জেনে। তার বদলে নির্বাচন প্রক্রিয়া বানচালের ডাক দিয়েছে। নাশকতা মোকাবিলার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু গুজব ও বানানো সংবাদকে হাতিয়ার করে যাতে তারা উত্তেজনা ছড়াতে না পারে, সাংবাদিকদের তা দেখতে হবে।
বিএনপি ও জামাতে ইসলামি ভোট বয়কট করায় ভোটারদের বুথমুখী করা এ বার সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ শাসক দল আওয়ামী লীগের। সংসদে বিরোধী জাতীয় পার্টি প্রায় আড়াইশো আসনে প্রার্থী দিলেও ভোট নিয়ে তাদের দোদুল্যমানতা বহাল রয়েছে। রংপুরে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তাঁকে বিশেষ প্রচারে নামতে দেখা যায়নি। এর আগে মনোনয়ন পত্র তোলা ও জমা দেওয়ার সময়েও কাদের অনুপস্থিত ছিলেন। বুধবারেও তিনি বলেছেন, “মানুষ যদি মনে করেন সুষ্ঠু ভাবে ভোটের প্রচার করতে দেওয়া হচ্ছে না, যে কোনও সময়েই আমরা নির্বাচন থেকে সরে যাব।” আওয়ামী লীগ অবশ্য তাঁর এই মন্তব্যকে চাপ সৃষ্টির কৌশল বলে মনে করছে। অন্যতম নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা জানিয়েছেন, নির্বাচন নিয়ে কোনও অনিয়মের ছবি তুলে তাঁদের কাছে পাঠালে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানুষের আশঙ্কার কোনও কারণ নেই।
নিজস্ব প্রতিবেদন