দুর্গের সামনে স্ত্রীর সঙ্গে বিল পেথারিক। ছবি সংগৃহীত
ঋত্ত্বিক ঘটকের ছবি ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’-র গল্পের সঙ্গে হুবহু মিল না থাকলেও, ছবির নায়ক কাঞ্চনের সঙ্গে তাঁর মিল রয়েছে একটি বিষয়ে। বাবার শাসনে অতিষ্ট কাঞ্চন বাডি় থেকে পালিয়ে চলে যায় তার স্বপ্নের শহর কলকাতায়। ইংল্যান্ডের বাসিন্দা বিল পেথারিকও সেনাবাহিনীর কড়া শাসনের ঘেরাটোপ এড়িয়ে পালিয়ে যান ফ্রান্সে। সেখানে খুঁজে নে্ন তাঁর জীবনসঙ্গিনীকে। বিয়ে করে সংসার পাতেন।
ঘটনার শেষ হয়তো এখানেই হয়ে যেতে পারত। কিন্তু হয়নি। স্বামী-স্ত্রী মিলে ব্যবসা করে টাকা জমিয়ে কিনে ফেলেন আঠারো শতকের একটি ভাঙাচোরা দুর্গ। দুর্গের দাম ভারতীয় মুদ্রায় ৮ কোটি টাকার কিছু বেশি। সব টাকা যে সে ব্যবসা থেকে এসেছে, তা নয়। পারিবারিক সূত্রে পাওয়া অর্থও তাঁদের এই দুর্গ কিনতে সাহায্য করেছে।
৪০ কামরার ভাঙাচোরা দুর্গকে সারিয়ে তুলতে নিজেই হাত লাগিয়েছেন পেথারিক। এ কাজে তাঁকে সাহায্য করেছেন তাঁর ভাই ও স্ত্রী গোয়েনডোলিন মউশেল। সুখেই দিন কাটছিল তাঁদের। কিন্তু, বিপদ হল একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর এক আধিকারিঙ্কের চোখে পড়ে গেল তাঁর এই সাক্ষাৎকার। ধরা পড়ে গেলেন পেথারিক। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, রানির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অশ্বারোহী বাহিনীর কর্মী ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে বাহিনী থেকে পালিয়ে আসেন ফ্রান্সে।
বাহিনীর নিয়ম মাফিক শুরু হয় তাঁর বিচার। বিচারে দায়িত্বে থাকা এক সেনা আধিকারিক ক্যাপ্টেন ড্যানিয়েল লোলর জানিয়েছন, পেথারিকের সৎ বোন মারা যাওয়ার পর তাঁকে সহকর্মীরা নিগ্রহ করেন। সেই সময় তিনি ছুটি না নিয়ে সেনা থেকে পালিয়ে যান।
এই সেই দুর্গ। ছবি সংগৃহীত
প্রশ্ন ওঠে, কেন তিনি পালানোর জায়গা হিসাবে ফ্রান্সকে বেছে নিয়েছিলেন? পেথারিক জানিয়েছেন, ফ্রান্সে তাঁর বাবা-মা থাকেন। তাই, তিনি পালানোর জন্য এই দেশকে বেছে নে্ন। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। তবে তাঁর কারাদণ্ড হয়নি। বাহিনী থেকে ছাঁটাই করা হয় তাঁকে।
টিভি সাক্ষাৎকারে পেথারিক জানিয়েছেন, ‘‘স্বপ্ন ছিল, দুর্গে বিলাসী জীবন কাটাব। সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।’’