ছবি- নাসার সৌজন্যে।
সূর্যের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে তার উত্তরোত্তর উজ্জ্বল হয়ে ওঠারই কথা ছিল। কিন্তু নভেম্বরের শেষ দিকে তা হঠাৎই হয়ে পড়ে নিভু-নিভু। হারিয়ে ফেলে প্রত্যাশিত ঔজ্জ্বল্য। ফলে, হতাশ হয়ে পড়েছিলেন অনেকেই।
তবে আবার বোধহয় ঔজ্জ্বল্য কিছুটা ফিরে পেয়েছে সেই আগন্তুক। ‘সূর্যপ্রণাম’ করতে আসা সেই মহাজাগতিক আগন্তুককে শনিবার সন্ধ্যার পর আকাশে শুক্রগ্রহের (যাকে আমরা শুকতারা বলে জানি) একটু বাঁ দিক ঘেঁষে থাকা অবস্থায় দেখা যেতে পারে। কোনও টেলিস্কোপ বা দূরবিন ছাড়াই। খালি চোখে। জানিয়েছে নাসা।
সেই মহাজাগতিক আগন্তুক আদতে একটি ধূমকেতু। যার ডাক নাম— ‘লিওনার্ড’। জ্যোতির্বিজ্ঞানের খাতায় কলমে তার নাম অবশ্য ‘সি/২০২১ এ ওয়ান’। এই ধূমকেতুটি এই বছরের জানুয়ারিতেই আবিষ্কার করেন মাউন্ট লেমন অবজারভেটরির জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্রেগরি জে লিওনার্ড। তাই ধূমকেতুটির ডাকনাম দেওয়া হয়েছে তাঁরই নামে।
নাসা জানিয়েছে, ডিসেম্বরের গোড়ার দিকে এই আগন্তুককে আকাশে সূর্যোদয়ের সামান্য আগে দেখা গেলেও এ বার তাকে দেখা যাবে দক্ষিণ-পশ্চিম আকাশে। সন্ধ্যা নেমে আসার পর। শুক্রের নীচে। একটু বাঁ দিক ঘেঁষে। তবে শনিবারই পূর্ণিমা। চাঁদের আলোয় তাই লিওনার্ডের কিছুটা ঢাকা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
এর পরেও লিওনার্ডকে আমাদের চোখে তুলে বড় ভূমিকা নিতে পারে শুকতারা। আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বল এই তারাটিকে চিনে নিতে আমাদের কোনও অসুবিধা হয় না বলেই তার নীচে একটু বাঁ দিক ঘেঁষে থাকা লিওনার্ডও আমাদের নজর এড়িয়ে থাকতে পারবে না বলেই বিশ্বাস জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের।
শুকতারার নীচে এখানে দেখা যাবে লিওনার্ডকে। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
জানুয়ারির ৩ তারিখে লিওনার্ড পৌঁছবে সূর্যের সবচেয়ে কাছে। তখন সূর্য থেকে ধূমকেতুটির দূরত্ব হবে ৯ কোটি ২০ লক্ষ কিলোমিটার। তবে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেই ধূমকেতুটি রওনা হবে সৌরমণ্ডল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে।
সূর্যের দিকে এগিয়ে আসতে আসতেও ধূমকেতুটি মাঝেমধ্যে নিভু-নিভু হয়ে পড়েছিল। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এর কারণ, ধূমকেতুটির মাথার দিকের একটি অংশ থেকে ছিটকে সূর্যের টানে বেরিয়ে এসেছিল তার বেশ কয়েকটি পাথুরে দেহাংশ।
প্রসঙ্গত, সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে এলেই ধূমকেতু যত কাছে আসে ততই সূর্যের টানে তার ভিতরে থাকা বরফ বেরিয়ে এসে ছড়িয়ে পড়ে মহাকাশে। তাতে তার লেজ তৈরি হয় আর তা উত্তরোত্তর আকারে বড় হয়ে ওঠে।