রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নতুন ভাস্কর্য। (ডান দিকে) উধাও সেই মূর্তি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি প্রতিবাদী ভাস্কর্যকে ঘিরে সরগরম ঢাকা। একুশে বইমেলার সমাগমের মধ্যে চারুকলা অনুষদের শিল্পীদের তৈরি ভাস্কর্যটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মঙ্গলবার বসান সেখানকার এক দল ছাত্রছাত্রী। বিখ্যাত রাজু ভাস্কর্যের পাশেই মুখে নীল রঙের সেলোটেপ লাগানো হেঁটমুণ্ড নতুন ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়। কবির হাতে ধরা গীতাঞ্জলি গ্রন্থের উপরে একটি ভারী পেরেক পোঁতা, চুঁইয়ে রক্ত বার হচ্ছে সেই ক্ষত থেকে।
ভাস্কর্যটি বসিয়ে পড়ুয়ারা জানিয়েছিলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতাহীনতার স্বরূপ তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে। ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারি জুড়ে ভাস্কর্যটি রেখে মানুষকে বার্তা দেওয়ার কথা ভেবেছেন তাঁরা। এই ভাস্কর্য নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা বিতর্ক শুরু হয় সমাজমাধ্যমে। অনেকে প্রশ্ন তোলেন, কেন রবীন্দ্রনাথ? আবার কারও দাবি, বাংলাদেশে ডিজিটাল আইনে যে ভাবে সরকার সমালোচকদের গ্রেফতার ও হেনস্থা করা হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গটি সঠিক ভাবেই ফুঠে উঠেছে ভাস্কর্যে। বিশ্বকবি তো বিশ্ববিবেক।
চর্চা গতি পেতেই বৃহস্পতিবার ভোরে দেখা গেল ভাস্কর্য উধাও। পড়ুয়াদের দাবি, বুধবার গভীর রাতেও তাঁরা রবীন্দ্রনাথকে এখানে দেখেছেন। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ভোরে সরানো হয়েছে সেটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী জানান, ভাস্কর্য সরানোর বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে একটি ভাস্কর্যের পাশে আলোচনা-অনুমোদন ছাড়া অন্য একটি ভাস্কর্য বসিয়ে দেওয়াটাও শোভনীয় নয়। বিকেলে ছাত্ররা একটি বিশাল ব্যানার এনে রবীন্দ্র-ভাস্কর্যের শূন্য স্থানে টাঙিয়ে দেন, যাতে লেখা— ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ।’