Mansarovar Yatra

মানস সরোবর যাত্রা ফের চালু হচ্ছে পাঁচ বছর পরে, ভারত-চিন বৈঠকে সিদ্ধান্ত সরাসরি উড়ান পুনর্বহালেরও

২০২০ সালে অতিমারির কারণে কৈলাস-মানস যাত্রা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে বছরেরই ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা ফৌজের আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে গিয়ে নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:১৪
Share:

(বাঁ দিকে) বিক্রম মিস্রী। ওয়াং ই (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।

সীমান্ত সমস্যা-সহ বিষয়েই এখনও পুরোপুরি পারস্পরিক ঐকমত্যে আসা সম্ভব হয়নি। তবু ভারত-চিন সম্পর্কে আর এক ইতিবাচক মাত্রা যোগ হলে সোমবার। পাঁচ বছর পরে আবার কৈলাস ও মানস সরোবর যাত্রা চালু করার বিষয়ে একমত হয়েছে নয়াদিল্লি-বেজিং। পাশাপাশি, আবার শুরু হচ্ছে ভারত এবং চিনের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ। দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির ৭৫তম বর্ষে বেজিংয়ে ভারতীয় বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রী এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইর বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘২০২৫ সালের গ্রীষ্মে কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী এ সংক্রান্ত খুঁটিনাটি (মেকানিজ়ম) আলোচনার মাধ্যমে স্থির হবে।’’ জলবিদ্যুৎ সংক্রান্ত তথ্য এবং আন্তঃসীমান্ত নদী সম্পর্কিত অন্যান্য সহযোগিতা পুনরুদ্ধার করা নিয়ে আলোচনা করার জন্য দ্বিপাক্ষিক বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার কথাও জানিয়েছে সাউথ ব্লক। সাধারণ ভাবে প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে চিন অধিকৃত তিব্বতের মানস সরোবর এবং কৈলাসে যাত্রা করতেন ভারতীয় পর্যটক ও পুণ্যার্থীরা। কিন্তু ২০২০ সালে কোভিড অতিমারির কারণে যাত্রা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ঘটনাচক্রে, সে বছরেরই ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা ফৌজের আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে গিয়ে নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা।

গত ডিসেম্বরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-র ‘টহলদারির সীমানা’ নির্ধারণ এবং মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছোনোর (ডিসএনগেজমেন্ট) বিষয়ে গত মাসে সমঝোতায় এসেছে নয়াদিল্লি এবং বেজিং। তার পরেই নতুন করে কৈলাস-মানস যাত্রা শুরু হচ্ছে। গত বছরের গোড়ায় চিনের তরফে শর্তসাপেক্ষে ওই যাত্রা চালু করার ইঙ্গিত দেওয়া হলেও ভারত সরকার উৎসাহ দেখায়নি। বিদেশ মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে এই কৈলাস-মানস যাত্রা। মূলত সিকিমের নাথু লা এবং উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাসের মাধ্যমে ভারত থেকে চিন অধিকৃত তিব্বতে প্রবেশ করেন পুণ্যার্থীরা। তার পর কড়া নিরাপত্তা বলয়ে তাঁদের কৈলাস পর্যন্ত নিয়ে যায় চিনা প্রশাসন।

Advertisement

উত্তরাখণ্ডের পথে কৈলাস-মানস যাত্রার তিনটি ভাগ রয়েছে। প্রথম ভাগে যেতে হয় পিথোরাগড় থেকে তাওয়াঘাট, যার দূরত্ব ১০৭.৬ কিলোমিটার। দ্বিতীয় পর্যায়ে যাত্রা শুরু হয় তাওয়াঘাট থেকে। ১৯.৫ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে পৌঁছতে হয় ঘটিয়াবগড়। শেষ ধাপে রয়েছে ঘটিয়াবগড় থেকে চিন সীমান্ত লাগোয়া লিপুলেখ পাস পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার রাস্তা। ২০২০ সালে দ্বিতীয় ধাপের রাস্তাকে সম্প্রসারণ ও সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত করেছে বর্ডার রোড অর্গানাইজ়েশন। এর ফলে তাওয়াঘাট থেকে সরাসরি লিপুলেখ পর্যন্ত গাড়িতে পৌঁছে যাওয়া যাবে। কালাপানির কাছে লিপুলেখ পাস ভারতের পশ্চিম সীমান্তের শেষ প্রান্ত বলে ধরা হয়। কিন্তু এই কালাপানি এলাকায় সীমান্ত নিয়ে ভারত ও নেপালের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। অন্য দিকে, ভারত-চিন সরাসরি উড়ানও অতিমারি পর্বের সূচনায, ২০২০ সালের গোড়ার বন্ধ হয়েছিল। তার মধ্যে ছিল কলকাতা থেকে কুনমিং এবং গুয়াংঝাও উড়ানও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement