লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ। ছবি: রয়টার্স।
লোহিত সাগরে একের পর এক জাহাজে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথিদের হামলায় ‘বন্ধু’ দেশ ইরানকে সতর্ক করল চিন। তেহরানকে সতর্ক করে বেজিং জানিয়েছে, লোহিত সাগরে হুথিদের হামলা বন্ধ করতে তারা পদক্ষেপ করুক। এই পরিস্থিতি দু’দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে চিন।
ইরানের এক সরকারি সূত্রের দাবি, চিন বলেছে, “যদি আমাদের স্বার্থ কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা হলে তার প্রভাব পড়বে দু’দেশের বাণিজ্য এবং কূটনৈতিক সম্পর্কে।” যদিও এই হামলা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে একাধিক বার। কিন্তু তার পরেও লোহিত সাগরে হুথিদের বাড়বাড়ন্ত কমেনি। আর তা নিয়েই ‘বন্ধু’ দেশ ইরানকে হস্তক্ষেপ করার কথা বলল চিন।
প্রসঙ্গত, ইরানের সঙ্গে চিনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অনেক মজবুত। তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্কও দীর্ঘ কয়েক দশকের। ইরানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদারও আবার চিন। ইরানের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেলও কেনে তারা। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা তাই বলছেন, হুথির হামলা নিয়ে তেহরানকে দেওয়া বেজিংয়ের এই সতর্কবার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তেহরান যদি এখনই হুথিদের না থামায়, তা হলে দু’দেশের সম্পর্ক যে তলানিতে ঠেকতে পারে। আর সেটা ইরানও চাইবে না। তাই বেজিংয়ের এই সতর্কবার্তার পর ইরান কোনও পদক্ষেপ করে কি না, সে দিকেই তাকিয়ে আন্তর্জাতিক মহল।
সুয়েজ খাল এশিয়া এবং ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্যের অন্যতম দরজা। বিশ্ববাণিজ্যের ১২ শতাংশ চলে লোহিত সাগর দিয়ে। আর তার মধ্যে ৩০ শতাংশই হল মালবাহী জাহাজ। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমালিদের পরে হুথিরা এখন আধুনিক অস্ত্রসম্ভার নিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর উপর হানা দিতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, গত ১৯ নভেম্বর থেকেই অশান্ত লোহিত সাগর। কারণ গাজ়ায় ইজ়রায়েলের উপর হামলার প্রতিবাদে এই সময় থেকেই একের পর এক বাণিজ্যিক জাহাজে আক্রমণ চালাতে থাকে ঘোষিত হামাস-সমর্থক হুথি। সেই হামলার পরই ইরান সমর্থিত হুথিকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দেয় আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান-সহ মোট ১২টি দেশ। যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, যদি লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলির উপর হামলা চালানো বন্ধ না হয়, তা হলে চূড়ান্ত পদক্ষেপ করা হবে। এ বার লোহিত সাগরে হামলার ঘটনায় ইরানকে সতর্ক করল চিন।