খুনের অপরাধীদের সর্বসমক্ষে গুলি করে হত্যা করা হত এর আগের তালিবানি জমানায়। ফাইল চিত্র।
তালিবানি শাসনের প্রথম আমলে অপরাধীকে গুলি করে হত্যা করা হত। চুরি বা সামান্য কম মাত্রার অপরাধে শাস্তি দেওয়া হত একটি হাত বা একটি পা কেটে নিয়ে। এ সবই হত প্রকাশ্যে। সম্প্রতি এক তালিবান নেতা মোল্লা নুরউদ্দিন তুরাবি জানিয়েছেন, স্বল্প অপরাধের সেই শাস্তি এই দ্বিতীয়বারের তথাকথিত ‘আধুনিক’ তালিবানি শাসনেও বজায় থাকবে। কারণ অপরাধীদের ‘‘হাত-পা কেটে নেওয়া দেশের নিরাপত্তার জন্যই জরুরি’’ বলে মনে করেন তালিবানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নুরউদ্দিন।
তালিবানি শাসনের প্রথম আমলে তিনি ছিলেন আফগানিস্তানের আইনমন্ত্রী। কারাগারের ভারপ্রাপ্তও। ইসলামিক আইন কী ভাবে বলবৎ করা হবে, বা তা ঠিকঠাক বলবৎ হচ্ছে কি না, সেটা নুরই দেখা শোনা করতেন। দ্বিতীয় তালিবানি শাসনেও তাঁর হাতে একই দায়িত্ব বর্তাবে কি না, তা তালিবান এখনও জানায়নি। তবে প্রাক্তন তালিবান আইনমন্ত্রী নিজেই আগ বাড়িয়ে তালিবানের নতুন আইন নিয়ে কিছু বিবৃতি দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নুর যা বলেছেন, তার মোদ্দা কথা হল, কোন দেশে কে কী শাস্তি পাচ্ছে, তা নিয়ে তালিবান তো আর কথা বলতে যায় না। তা হলে দেশের মানুষকে তারা কী শাস্তি দেবে, তা নিয়ে অন্য দেশের কথা তালিবান শুনতে যাবে কেন!
মোল্লা নুরউদ্দিন তুরাবি।
বৃহস্পতিবার দেওয়া সাক্ষাৎকারটিতে নুর বলেছেন, ‘‘আমাদের আইন আমরা কী ভাবে বলবৎ করব, তা অন্য কেউ বলে দেবে না। আমরা আমাদের আইন নিজেরা তৈরি করব। ইসলামকে অনুসরণ করে আর কোরানের উপর ভিত্তি করেই তৈরি করব।’’
নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তানের তালিবান শাসনের প্রথম আমলে কঠিন আর নৃশংস আইন বলবৎ করার জন্য কুখ্যাত ছিলেন নুরউদ্দিন। সে সময় আফগানিস্তানে খুনের অপরাধীদের সর্বসমক্ষে গুলি করে হত্যা করা হত। হত্যা করতেন নিহত বা নিগৃহীতের পরিবারের মানুষ। সর্ব সমক্ষেই দোষীদের হাত–পাও কেটে নেওয়া হত। বড় খেলার মাঠ বা স্টেডিয়ামের ভিতর দেওয়া হত সেই শাস্তি। নুর অবশ্য আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, ‘‘এ বার হাত –পা কাটা হলেও তা জনসমক্ষে হবে না।’’
অগস্টে আফগানিস্তানের শাসনভার হাতে নেওয়া ‘তালিবান ২.০’ নিজেদের ‘উদারপন্থী’ শাসক বলে দাবি করেছে। তবে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মত, পদে পদে নিজেদের দাবি নিজেরাই খণ্ডন করে চলেছে তালিবান।