সিএনএনের ওই সাংবাদিক। ছবি: সংগৃহীত।
আফগানদের দুর্দশার কথা শুনছিলেন এক মহিলা সাংবাদিক। পাশ থেকে এসে একজন বলে গেলেন, ‘‘আপনাকে মুখ ঢাকতে বলা হচ্ছে।’’ বক্তা একজন দোভাষী। তবে যাঁদের নির্দেশে তিনি এই বার্তা পৌঁছে দিলেন, তাঁরা সশস্ত্র তালিবান। সিএনএনের ওই সাংবাদিক বোরখায় আপাদমস্তক আগে থেকেই ঢেকে ছিলেন। শুধু মুখের অংশটুকুই নিরাবরণ ছিল। তাতেই আপত্তি তালিবানের।
সাংবাদিক অবশ্য অবাধ্য হননি। তালিবানি ফতোয়া মেনে মুখ ঢেকেই কাজ শুরু করেন তিনি। দোভাষীকে জানান, সংবাদ সংগ্রহের অনুমতি নেওয়া আছে তাঁদের। তা ছাড়া তিনি তালিবান নয় আমেরিকারই সমালোচনা করছেন। কিন্তু সেই পাল্টা যুক্তি দিতে যাওয়াই কাল হল। সমস্যার সমাধানের বদলে দেখা গেল বন্দুকের বাট উঁচিয়ে মারতে আসছে তালিবান। সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা আলোকচিত্রীকে মারতে যাওয়ার মুহূর্তে কোনও মতে গাড়িতে উঠে পালাতে বাধ্য হন দু’জনে। পুরো ঘটনাটিই ধরা পড়েছে সাংবাদিকের ভিডিয়ো ক্যামেরায়। তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘অনুমতি নেওয়ার পরও সংবাদমাধ্যমকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছ, তা হলে ভাবুন এখানকার সাধারণ মানুষের কী অবস্থা!’’
ওই মহিলা সাংবাদিকের নাম ক্লারিসা ওয়ার্ড। আর তাঁর আলোকচিত্রী এবং প্রোডিউসার ব্রেন্ট সোয়াইলস। বিমানবন্দর চত্বরে দেশ ছেড়ে পালাতে চাওয়া আফগানদের বক্তব্য শুনছিলেন তিনি। আমেরিকার শিবিরে কাজ করা এক ব্যক্তির বিমানবন্দরে ঢুকতে না পারার অভিজ্ঞতা শুনছিলেন। সেই সময়েই আসে তালিবানি ফতোয়া।
অনুমতির কথা জানিয়ে মুখ ঢেকে রিপোর্ট করতে করতে ক্ল্যারিসাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘পরিস্থিতি ভাল ঠেকছে না। আমার মনে হয় গাড়িতে ফিরে যাওয়া উচিত। ঠিক সেই মুহূর্তেই ক্যামেরায় বন্দুকের বাঁট উঁচিয়ে আক্রমণ করতে আসা এক তালিবান যোদ্ধাকে দেখা যায়।’’
আক্রমণের মুহূর্তে তালিবান যোদ্ধা। ছবি: সংগৃহীত।
পরে নিরাপদ দূরত্বে পৌঁছে ক্লারিসা ভিডিয়ো ক্যামেরাতেই বলেন, ‘‘ভাবুন, আমরা সংবাদ সংগ্রহ করতে এসেছি। আমাদের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। তারপরও এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তাহলে সাধারণ মানুষ, যাঁদের তেমন কোনও উচ্চমহলে যোগাযোগ নেই, তাঁরা কী অবস্থায় রয়েছেন।’’