Taliban regime

Taliban and Haqqani Network: পাক-জঙ্গিদের আনাগোনা বাড়ছে আফগানিস্তানে, তাও তালিবান-হক্কানি যোগ মানছে না আমেরিকা

জঙ্গি হামলা এবং আল কায়েদার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কারণে হক্কানি নেটওয়ার্ককে জঙ্গি গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা করেছিল আমেরিকা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২১ ২০:৩৬
Share:

—ছবি সংগৃহীত।

আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তানের মাটিতে পাক-জঙ্গিদের ভিত শক্ত হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে একাধিক বার হামলা চালানো পাক-জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদও ওই দেশের হেলমন্দ প্রদেশে ঘাঁটি গেড়েছে। পূর্ব আফগানিস্তানের কুনারেও জাল বিছাচ্ছে ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার নেপথ্যে থাকা জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা এবং এই গোটা প্রক্রিয়াই চলছে হক্কানি নেটওয়ার্কের হাত ধরে। বিভিন্ন সূত্রে খবর মিলেছে, বর্তমানে কাবুল শহরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন হক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা খালিল-উল-রহমান হক্কানি। তালিবানের সঙ্গে হক্কানি গোষ্ঠীর যোগসাজশের প্রমাণ হিসেবে এই রিপোর্ট উঠে আসার পরেও আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হল, দুই সংগঠন সম্পূর্ণ আলাদা।
নাগরিকদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া চলাকালীন কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিজেদের সেনা মোতায়েন করে আমেরিকা। তবে তারা বাইরের চত্বরের নিরাপত্তার জন্য তালিবানের উপরই আস্থা রাখছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদানও হচ্ছে। তার মধ্যেই গত সপ্তাহে হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে এসে ঘুরে গিয়েছিলেন খালিল হক্কানি। আফগানিস্তানে জঙ্গি হামলা, আমেরিকার সেনার উপর আক্রমণ এবং আল কায়দার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কারণে গত ২০১২ সালে হক্কানি নেটওয়ার্ককে জঙ্গি গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা করেছিল ওবামা প্রশাসন। সেই সঙ্গে খালিল হক্কানির মাথার দামও ৫ মিলিয়ন আমেরিকান ডলার ঘোষণা করা হয়। বেশ কয়েকটি রিপোর্টে দাবি করা হয়, রাওয়ালপিন্ডির পাক-সেনা ঘাঁটিতেও হক্কানির নিত্য যাতায়াত রয়েছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মতে, গত বছর দোহা-সমঝোতার পরেও আমেরিকাকে এড়িয়ে হক্কানি গোষ্ঠীকে আফগানিস্তানের মাটিতে তালিবান জায়গা করে দেওয়ায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে বাইডেন প্রশাসন।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে তালিবানের সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য চালাচালি আমেরিকা জারি রাখবে কি না, সে ব্যাপারে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নেড প্রাইসকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘তালিবান ও হক্কানি নেটওয়ার্ক দু’টি আলাদা গোষ্ঠী।’’ তবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় সিআইএ-র সন্ত্রাস বিরোধী দফতরের প্রাক্তন প্রধান ডগলাস লন্ডনের কথায়, ‘‘তালিবানের উত্থানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছে হক্কানি আর পাকিস্তানের যোগসাজশ।’’

কাবুল বিমানবন্দরে পর পর দু’টি বিস্ফোরণের ঘটনার পর গভীর রাতে হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস-এর ‘খোরাসান’ শাখা সংগঠন। বিবৃতিতে একটি ছবি প্রকাশ করে তারা জানিয়েছে, আমেরিকার সেনা এবং তাদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন যোগাযোগ বজায় রেখে চলা যে সব আফগানরা দেশ ছাড়তে চেয়ে বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় জমিয়েছিলেন, তাঁদের নিশানা করেই ওই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তবে ব্যারন হোটেলের সামনে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ এবং এলোপাথাড়ি গুলি-বর্ষণ নিয়ে কোনও প্রসঙ্গ ছিল না ওই বিবৃতিতে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বিমানবন্দরের হামলার ঘটনায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে হক্কানি নেটওয়ার্কই। কারণ ওই ঘটনার পর আরও কাবুল বিমানবন্দর ছাড়তে আরও তৎপর হবে আমেরিকা, ব্রিটেন। তাতে আফগানিস্তানে নিজেদের ভিত আরও পোক্ত করতে পারবে হক্কানি গোষ্ঠী। এর পরেও কেন হক্কানি ও তালিবানের মধ্যে যোগাযোগকে মানতে নারাজ আমেরিকা, সেই প্রশ্নই উঠছে এখন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement