—প্রতীকী ছবি।
অনিরাপদ ঋণের ক্রমবর্ধমান চাপ এবং বিশ্ব বাজারের অস্থিরতা। আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টে এই দু’টি বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল কেন্দ্র। তবে স্থিতিশীল রয়েছে দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা। পাশাপাশি, রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির হাতে পর্যাপ্ত পুঁজি আছে বলেও জানিয়েছে সমীক্ষা রিপোর্ট।
শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি সংসদে আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্ট সংসদে পেশ করে সরকার। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১২ বছরের মধ্যে এ দেশের ব্যাঙ্কগুলির ‘অনুৎপাদক সম্পদ’-এর (নন পারফর্মিং অ্যাসেট) পরিমাণ সবচেয়ে কমে ২.৬ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু সেই সঙ্গে অনিরাপদ ব্যক্তিগত ঋণ এবং ক্রেডিট কার্ডের ঋণখেলাপির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খুচরো ঋণের ৫১.৯ শতাংশ নতুন করে এনপিএতে যুক্ত হয়েছে। দেশের আর্থিক বৃদ্ধির সূচককে ঊর্ধ্বমুখী রাখতে ঋণখেলাপির পরিমাণ কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আর্থিক স্থিতিশীলতা রিপোর্ট (ফিন্যান্সশিয়াল স্টেবিলিটি রিপোর্ট) প্রকাশ করে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। সেখানে বলা হয়, ব্যক্তিগত ঋণ এবং ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের অর্ধেকের বৃহত্তর সুরক্ষিত ঋণ রয়েছে। অর্থাৎ গৃহঋণ বা গাড়ি কেনার জন্য ঋণ নিয়েছেন তাঁরা। ব্যক্তিগত বা ক্রেডিট কার্ডে ঋণ খেলাপ করলে তাঁদের গায়ে কালো দাগ লাগার আশঙ্কা রয়েছে। এটি অপরাধের ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে বলে জানিয়েছে আরবিআই।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সমীক্ষা অনুযায়ী, সাম্প্রতিক অতীতে এ দেশের জনগনের মধ্যে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তাই এতে ঝুঁকি কমাতে ২০২৩ সালের নভেম্বরে পদক্ষেপ করে আরবিআই। খুচরো অসুরক্ষিত ঋণের উপর সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। কিন্তু, তা সত্ত্বেও আমজনতার ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমেছে, তা বলা যাবে না।
আরবিআই জানিয়েছে, ঋণের বাজার সম্প্রসারিত হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে গৃহঋণ। ঋণখেলাপির পরিমাণ কমাতে বেশ কিছু কঠোর নিয়ম চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে ঋণের সূচক বৃদ্ধির পরিমাণ কিছুটা নিম্নমুখী হয়েছে। আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টে ঋণ এবং আমানতের মধ্যে ফারাকের দিকটিও তুলে ধরা হয়েছে।
শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে ২০২৫-’২৬ আর্থিক বছরের বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ঠিক তার আগের দিন প্রকাশিত হওয়া আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে অনিরাপদ ঋণখেলাপি বৃদ্ধির উল্লেখ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাজেটে কোনও বড় ঘোষণা হয় কিনা, সেটাই এখন দেখার।