শরিয়ত বয়াতি
এক মাদ্রাসা শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ যে ভাবে এক সুফি বাউল শিল্পীকে গ্রেফতার করে ধর্মদ্রোহের মামলা দিয়ে হেফাজতে নিয়েছে, তা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বাংলাদেশের মুক্তমনারা। তাঁদের কথায়, মৌলবাদীদের হাতে বাংলাদেশের সুফি-বাউলরা বারে বারে নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু এ বার যে ভাবে সরকার ও প্রশাসনকে সেই কাজে ব্যবহার করা হয়েছে, এ দেশে তা বেনজির। মুক্তমনাদের দাবি, জামাতে ইসলামিকে ঠেকাতে শেখ হাসিনার সরকার এই ভাবে আর এক শ্রেণির মৌলবাদী ইসলামির কাছে মাথা নত করে চলেছে। ধর্মদ্রোহের মামলা তুলে নিয়ে অবিলম্বে শরিয়ত বয়াতি নামে এই সুফি ঘরানার বাউল শিল্পীকে মুক্তি দেওয়ার দাবি উঠেছে।
বাউল ও সুফি গান ইসলাম-বিরোধী, বরাবর এই দাবি করে এসেছে মৌলবাদীরা। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বয়াতি দাবি করেন, ইসলামে গান-বাজনা নিষিদ্ধ কেউ প্রমাণ করতে পারলে তিনি ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেবেন। ‘টুপিধারি হুজুররা’ এ বিষয়ে ভুল ব্যাখ্যা করে বলেও বয়াতি মন্তব্য করেন। এর পরে মৌলবাদী ওলামারা প্রথমে বয়াতিকে গ্রেফতারের দাবিতে সভা করেন। তার পরে মির্জাপুরের এক মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক থানায় অভিযোগ করেন, বয়াতির কথা ইউটিউবে শুনে তাঁর ধর্মবিশ্বাস আহত হয়েছে। শনিবার ময়মনসিংহ থেকে পুলিশ শরিয়তকে গ্রেফতার করে ধর্মদ্রোহ ও জিডিটাল আইনভঙ্গের মামলা দেয়। আদালত বয়াতিকে ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায়।
সরকারের সহযোগী দল জেএসডি-র নেতা হাসানুল হক ইনু অবিলম্বে শরিয়তের মুক্তি এবং যে পুলিশ কর্তারা তাঁকে গ্রেফতার করেছে, মৌলবাদীদের সঙ্গে আঁতাঁতের দায়ে তাঁদের অপসারণ দাবি করেছেন। গ্রেফতারের নিন্দা করেছেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ফজলে হোসেন বাদশাও। সোশ্যাল সাইটে সরব হয়েছেন বাংলাদেশের বহু বিশিষ্ট মানুষ, লেখক, শিল্পী এবং মুক্তমনা সাংস্কৃতিক কর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, শরিয়তকে জেরা করে অভিযোগের ‘সারবত্তা’ পাওয়া গিয়েছে।