পড়ুয়াদের উপর লাঠিচার্জ।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া এবং আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (আমু)-র পড়ুয়াদের উপরে পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা করলেন আমেরিকার ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও প্রাক্তনীরা। ভারতের ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, পুলিশি হামলার ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইয়েল ইউনিভার্সিটি-সহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পড়ুয়াদের দাবি, পুলিশি হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে এবং পুলিশি ‘বর্বরতা’ রুখতে অবিলম্বে পদক্ষেপ করুন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তা না হলে, তিনি পদত্যাগ করুন।
জামিয়া মিলিয়া ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে কাল বেনজির বিক্ষোভে দেখায় দেশের ছাত্র সমাজ। আইআইটি, আইআইএম-সহ দেশের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পড়ুয়ারা প্রতিবাদে পথে নামেন। এ বার আমেরিকাতেও পৌঁছল বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি হামলার আঁচ।
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অন্তত ৩০০ বর্তমান ও প্রাক্তন পড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাংবিধানিক গণতন্ত্রের ভিত্তিপ্রস্তর হল প্রতিবাদ। প্রতিবাদের মাধ্যমে নিজের মতামত এবং মনোভাব প্রকাশ করার অধিকার সকলের রয়েছে। ভারতীয় সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন তাকে স্বীকৃতি দেয়। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উপরে পুলিশি হামলা প্রবল ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। হার্ভার্ড ল স্কুলের ছাত্র ঝলক এম কক্কর বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ ছাত্র-বিক্ষোভে যে ভাবে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী দমনপীড়ন চালিয়েছে তা ভারতীয় সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে লঙ্ঘনের শামিল।’’ পাশাপাশি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পড়ুয়াদের অভিযোগ, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘পক্ষপাতমূলক’।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রয়োজনীতা ও বৈধতা মেনেই কোনও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হস্তক্ষেপ করা উচিত। মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পড়ুয়ারা দাবি করেছেন, সংবিধান মেনে বিক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের সুযোগ দিতে হবে। সেখানে পুলিশ দমনপীড়ন করতে পারবে না। কোনও রাজনৈতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার না করে ভারতের পুলিশ এবং প্রশাসন সংবিধান মেনে কাজ করুক। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে আজ প্ল্যাকার্ড-পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন পড়ুয়ারা। তাঁরা নাগরিক পঞ্জি বয়কট এবং মোদী সরকারের ‘অপশাসন’-এর প্রতিবাদে সকলকে সরব হওয়ার আহ্বান জানান।