—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
চিনের কোনও গুপ্তচর জাহাজকে এক বছরের জন্য তাদের কোনও বন্দরে ঠাঁই দেওয়া হবে না। ভারতকে এমনই জানাল দক্ষিণের দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। ভারত আগেই এই বিষয়ে শ্রীলঙ্কাকে অনুরোধ জানিয়েছিল। বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র মারফত জানা যায়, গত ২১ জুলাই সে দেশের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের সঙ্গে বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। তার পর শ্রীলঙ্কার চিনা জাহাজ নিয়ে এই ‘কঠোর’ অবস্থানকে নয়াদিল্লির ‘কূটনৈতিক জয়’ বলেই মনে করছেন কেউ কেউ।
শ্রীলঙ্কার তরফে অবশ্য এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে শ্রীলঙ্কা প্রশাসনের যে অংশটি এই বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং অভিজ্ঞ, তাদের তরফেই এই খবর প্রকাশ্যে এসেছে। রবিবার কলম্বোর তরফে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার বন্দর তো বটেই, তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা (ইইজ়েড)-য় এক বছরের জন্য ঢুকতে পারবে না কোনও চিনা ‘গুপ্তচর’ জাহাজ। ওই সূত্রটি অবশ্য জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের কথা গত সপ্তাহেই নয়াদিল্লিকে জানিয়ে দিয়েছে কলম্বো।
শ্রীলঙ্কার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে চলেছে সোমবার, নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই। আগামী ৫ জানুয়ারি ভারত মহাসাগরের গভীর জলে ‘গবেষণা’ করার জন্য কলম্বো বন্দরে যাওয়ার কথা ছিল চিনের জাহাজ ইয়াং হং ৩-এর। জাহাজটি মে মাস অবধি সেখানে থাকবে বলে শ্রীলঙ্কাকে জানিয়েছিল চিন। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই অনুমোদন শ্রীলঙ্কা বাতিল করেছে বলে জানা যাচ্ছে। গবেষণাধর্মী কাজ চালাতে তাই ভারত মহাসাগরের আর এক দ্বীপরাষ্ট্র মলদ্বীপে জাহাজ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে বেজিং।
গত বছর চিনের নজরদার জাহাজ ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’ শ্রীলঙ্কার বন্দরে ভিড়েছিল। সেই সময় এই বিষয়ে ভারতের তরফে কড়া বার্তা দেওয়া হয়। যদিও তার পরও চলতি বছরেরই অগস্ট মাসে শ্রীলঙ্কায় নোঙর ফেলেছিল পিএলএ-র জাহাজ ‘হাই ইয়াং ২৪ হাও’। চিন এগুলিকে গবেষণার কাজে ব্যবহৃত জাহাজ বলে দাবি করলেও ভারতের আশঙ্কা ছিল যে, পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির উপর নজরদারি করতেই বার বার শ্রীলঙ্কার নৌসেনার পোতাশ্রয়ে যাচ্ছে চিনা যুদ্ধজাহাজগুলি। এই বিষয়ে শ্রীলঙ্কাকে সম্প্রতি সাবধান করে আমেরিকাও। তার পরেই শ্রীলঙ্কার এই সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।