বেরুটের দক্ষিণে শহরতলি এলাকায় এই জায়গাতেই ইজ়রায়েলি হামলায় মৃত্যু হয়েছে নাসরাল্লার। ছবি: রয়টার্স।
ইজ়রায়েলি হানায় হিজ়বুল্লার শীর্ষ নেতা হাসান নাসরাল্লা নিহত হওয়ার পরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন তুতোভাই হাশেম সাফি আল দিন। হিজ়বুল্লার কর্মসমিতির প্রধান হিসাবে হাশেম সংগঠনের তরফে রাজনৈতিক বিষয়গুলি দেখে থাকেন। হিজ়বুল্লার জঙ্গি কার্যকলাপের তত্ত্বাবধায়ক জেহাদ সমিতিতেও তিনি আছেন। গত তিন দশক ধরে শিক্ষা, অর্থনীতি-সহ সংগঠনের অসামরিক কার্যকলাপও দেখাশোনা করেছেন।
নাসরাল্লার থেকে চার বছরের ছোট হাশেমের বয়স এখন ৬৪ বছর। তাঁদের চেহারাতেও মিল রয়েছে। তরুণ বয়সে একই সঙ্গে দু’জনে হিজ়বুল্লায় যোগ দিয়েছিলেন। দু’জনেই তার পরে ইরানে একসঙ্গে ধর্মশিক্ষা নিতে যান। ১৯৯২-এ আকাশপথে ইজ়রায়েলি হানায় হিজ়বুল্লার শীর্ষ নেতা আব্বাস আল মুসাভি নিহত হওয়ার পরে তাঁর জায়গা নিতে নাসরাল্লাকে লেবাননে নিয়ে আসা হয়েছিল। তার দু’বছর পরে হাশেমকেও বেরুটে ফিরিয়ে আনা হয় নাসরাল্লার উত্তরসূরিমনোনীত করে।
২০১৭ সালে আমেরিকা হাশেমকে জঙ্গি ঘোষণা করে। একই বছরে সৌদি আরব তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। আমেরিকার হামলায় নিহত ইরানের সেনাকর্তা কাশেম সোলেমানির মেয়ের শ্বশুর হওয়ায় সেই দেশের সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক রয়েছে হাশেমের।
লেবাননের সূত্র উদ্ধৃত করে একটি ফরাসি সংবাদপত্রের দাবি, শনিবার বিকেলে নাসরাল্লা-সহ হিজ়বুল্লার শীর্ষ নেতাদের অবস্থানের বিষয়ে ইরানে থাকা কোনও গুপ্তচরের থেকে খবর পেয়েই ইজ়রায়েল দ্রুত হামলা চালায়। তাতে নাসরাল্লার সঙ্গে হাশেমও নিহত হয়েছেন বলে খবর ছড়িয়েছিল। কিন্তু সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্র উদ্ধৃত করে পরে জানায়, হাশেম জীবিত।
এ দিকে আকাশ পথে লেবাননে ইজ়রায়েলি হামলা অব্যাহত। সন্ত্রস্ত হয়ে প্রচুর মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে সীমান্ত পেরিয়ে সিরিয়ায় ঢুকে পড়ছেন। দু’দেশের মধ্যে সহজে যাতায়াত চলে। কোনও নথি ছাড়াই সিরিয়া থেকে যে সব শরণার্থী এসেছেন লেবাননে, তাঁদের মধ্যে ইজ়রায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের লোকও আছেন বলে মনেকরছে হিজ়বুল্লা।
এ দিকে ইয়েমেনেও বিমানহানা চালাল ইজ়রায়েল। তার জেরে নিহত হয়েছেন অন্তত চার জন। আহত ২৯। দু’টি বন্দর এমনকি যুদ্ধবিমান নিশানা করেও বোমা ফেলে ইজ়রায়েল। হুথি জঙ্গিরা ইজ়রায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়েছিল। তারই পাল্টা ইজ়রায়েলের এই হামলা। রবিবার আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁর আশা, গোটা পশ্চিম এশিয়া জুড়ে যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হবে। বাইডেন বলেন, “এ জন্য পদক্ষেপ করতেই হবে।”