দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু। — ফাইল চিত্র।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সুর ‘ইমপিচমেন্ট’-এর নির্দেশ বাতিল করল সে দেশের সাংবিধানিক আদালত। সোমবার আদালতের নির্দেশের পরেই হানকে ফের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে দেশে সামরিক আইন জারির জন্য তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে বরখাস্ত করার পর তাঁকে এই ভূমিকা দেওয়া হয়েছিল। তার মাত্র কয়েক দিন পরেই আইনপ্রণেতারা হানকেও বরখাস্ত করেন।
সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার আদালতের আট বিচারপতির ভোটাভুটিতে হানের ইমপিচমেন্ট বাতিল হয়েছে। ৭-১ ভোট পেয়ে পদে ফিরছেন হান। কোরিয়ার সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই বিচারপতি হানের ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব সম্পূর্ণ বাতিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এক জন বিচারপতি বাদে বাকিরাও তাতে সম্মতি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মাত্র দু’সপ্তাহ অন্তর্বতী প্রেসিডেন্ট পদে বহাল ছিলেন প্রধানমন্ত্রী হান। পদে আসার পর হান সাংবিধানিক আদালতে তিন জন বিচারপতিকে নিয়োগ করতে অস্বীকার করেন। এর পরেই বিরোধীদের সঙ্গে বিরোধের মুখে গত ২৭ ডিসেম্বর তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি, সামরিক আইন জারির নেপথ্যেও তাঁর ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। হান বরখাস্ত হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেন সে দেশের অর্থমন্ত্রী চৌই সাং-মক। এ বার ফের সেই পদে ফিরছেন হান।
গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক (মার্শাল) আইন জারি করেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইওল। এর ফলে দেশ জুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়। ইওলের যুক্তি ছিল, উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনের মদতে ক্ষমতা দখলের ছক কষছেন বিরোধীরা। তাই দেশকে ‘কমিউনিস্ট আগ্রাসন’ থেকে সুরক্ষা দিতে এবং রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে নির্মূল করতে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করা প্রয়োজন। যদিও প্রবল চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত সামরিক আইন মাত্র ছয় ঘণ্টা স্থায়ী হয়। তবে এর খেসারত দিতে হয় ইওলকে। দেশজোড়া বিদ্রোহে ‘উস্কানি’ দেওয়ার অভিযোগে গত ১৫ জানুয়ারি ইওলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পরেই ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল হানকে।