ছবি: রয়টার্স।
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের উপরে চাপ বাড়িয়ে দেশের কৃষক-বিক্ষোভের রেশ এ বার আমেরিকাতেও। ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রমীলা জয়পাল-সহ সাত জন প্রভাবশালী আমেরিকান কংগ্রেস-সদস্য বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োকে চিঠি লিখে আর্জি জানালেন, শীঘ্রই এ নিয়ে সরকারি ভাবে উদ্বেগ জানানো হোক ভারতের কাছে। দিল্লিকে বোঝানো হোক যে, ভারতীয় কৃষকদের আন্দোলনের অধিকারের পক্ষেই আছে ওয়াশিংটন। আমেরিকা সব সময়েই বাক্স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেয়। তা সে যে দেশেরই বিষয় হোক না কেন!
দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ভারতের কৃষক আন্দোলনের প্রতি আগেই সমর্থন জানিয়েছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সে বার কঠোর অবস্থান নিয়ে ট্রুডোর মন্তব্যকে ‘অসতর্ক’ এবং ‘অবাঞ্ছিত’ বলে মন্তব্য করেছিল। কৃষি আইন এবং তা নিয়ে চলতে থাকা কৃষক বিক্ষোভের বিষয়টি একেবারেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে এ বারও দাবি করেছে দিল্লি। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনও দেশের হস্তক্ষেপ কিংবা অযাচিত মন্তব্য বরদাস্ত করা হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। আমেরিকার বেশ কিছু সেনেটর-সহ ভারতের কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে আরও নানা জায়গা থেকে বিচ্ছিন্ন কিন্তু মন্তব্য আসায় চলতি মাসের গোড়াতেই মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছিলেন, ‘‘ভুল তথ্য দ্বারা চালিত হয়ে অনেকেই যা-খুশি বলছেন। কিন্তু ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা একেবারেই অযাচিত।’’
আমেরিকার বিদায়ী বিদেশসচিব পম্পেয়ো এখন সত্যিই বিষয়টি সরকারি ভাবে উত্থাপন করলে দিল্লি কী প্রতিক্রিয়া জানায়, সেটাই দেখার। প্রমীলারা চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘ভারত সরকার নিজেদের মতো করে জাতীয় নীতি গ্রহণ করতেই পারে। আমরা সেই অধিকারকে সম্মান করি। পাশাপাশি এর বিরোধিতায় যে কৃষক আন্দোলন চলছে, আমরা সেই বিরোধিতার অধিকারকেও সম্মান করি।’’
প্রমীলাদের আগেই এ মাসের শুরুতে জিম কোস্টা, এস জ্যাকসন কিংবা ডেভিড ট্রনের মতো আমেরিকান কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা বিক্ষোভকারী কৃষকদের সমর্থন করার কথা জানিয়েছিলেন। আন্দোলন ঠেকাতে দমনপীড়ন কিংবা সমাধানসূত্র বার করার ক্ষেত্রে সরকারের অনীহা নিয়েও সুর চড়িয়েছিলেন তাঁরা। ট্রন এমনকি সুপ্রিম কোর্টের মধ্যস্থতার আর্জিও জানিয়েছিলেন।
সেই রেশ টেনেই ২৩ ডিসেম্বর পম্পেয়োকে ওই চিঠিটি লেখেন প্রমীলারা। চিঠিতে বলা হয়েছে, নানাবিধ আন্দোলনের সঙ্গে পরিচিত আমেরিকা। তাই উদ্ভূত সামাজিক অস্থিরতার সময়ে ভারতকে তাঁরা পরামর্শ দিতেই পারেন। নিজেদের উদ্বেগের কথা জানাতে গিয়ে তাঁরা বলেন, ‘‘বিষয়টির জেরে বহু ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান প্রভাবিত। কারণ, তাঁদের আত্মীয়-স্বজন এবং পূর্বপুরুষের জমি-বাড়ি রয়েছে পঞ্জাবে। এঁরা নিজেদের পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাই অবিলম্বে ওয়াশিংটনের কথা বলা উচিত ভারতের সঙ্গে।’’