মহম্মদ বিন সলমন। —ফাইল চিত্র।
মার্কিন চ্যানেলের যে সাক্ষাৎকারে তেলের দাম ‘অকল্পনীয় ভাবে’ বেড়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, সেখানেই সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন দাবি করলেন, তাঁর দেশের সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যার দায় সম্পূর্ণ তাঁরই। কারণ, সৌদি সরকারের কর্মীরাই তাতে জড়িত ছিলেন। ৩৪ বছর বয়সি যুবরাজ বলেন, ‘‘ওটা ছিল ভয়ঙ্কর অপরাধ। সৌদি আরবের নেতা হিসেবে পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছি। কারণ, সৌদি সরকারের কর্মীরা এতে জড়িত ছিলেন।’’
কিন্তু হত্যার দায়িত্ব নিয়েও যুবরাজ পরে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, খাশোগি খুনের নির্দেশ তিনি কখনওই দেননি। যদিও মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র তদন্তে উঠে এসেছিল, বিন সলমন এই খুনে সায় দিয়েছিলেন। সাক্ষাৎকারে সে দাবি উড়িয়ে যুবরাজ বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে সত্যিই যদি সে ধরনের কোনও অভিযোগ উঠে থাকে, তা হলে সেটা প্রকাশ্যে আনা হোক।’’
গত বছরের ২ অক্টোবর খুন হয়েছিলেন খাশোগি। যা নিয়ে জলঘোলা হয়েছে বিস্তর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিতর্কের মধ্যে নিজেদের ভাবমূর্তি যতটা সম্ভব পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে সৌদি প্রশাসন। মানবাধিকারের প্রশ্নে সৌদি যুবরাজের অবস্থান কালিমালিপ্ত হয়েছে। আর তেল নিয়ে ইরানের সঙ্গে টানাপড়েনের মধ্যে আমেরিকার সঙ্গে কৌশলগত সুসম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রেও এই একটি কাঁটাই রয়েছে বিন সলমনের।
গত বছরের ২ অক্টোবর তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে গিয়েছিলেন খাশোগি। সৌদি প্রেমিকাকে বিয়ে করার জন্য একটি নথি প্রয়োজন ছিল তাঁর। অভিযোগ, দূতাবাসের ভিতরেই
সৌদি সরকারের প্রতিনিধিরা খাশোগিকে খুন করে তাঁর হাত পা কেটে সব দেহাংশ সরিয়ে দেয়। সৌদি প্রশাসন ১১ জনের বিরুদ্ধে এই খুনের দায় চাপিয়ে বিচার চালিয়েছে গোপনে। এখনও কাউকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি। তবে সৌদি সরকার বরাবরই বোঝাতে চেয়েছে, এই খুনে যুবরাজের কোনও ভূমিকা নেই। বিতর্ক তবুও থামেনি।